ঢাকা: পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যন্ত বই মেলা নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাহিত্যিকদের এনে সাহিত্যমেলার আয়োজনের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলা- ২০২৪ উদ্বোধনের আগে বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান। পরে তিনি মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সাহিত্যমেলা করার কথা ছিল। এখানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কবি, সাহিত্যিকদের নিয়ে এসে কিন্তু আমরা সাহিত্যমেলাও করতে পারি। সেটা আমরা করছি, মাঝে মাঝে বিদেশ থেকে আসে। কোভিড ১৯ এর কারণে একটু থমকে গেছে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আমার মনে হয়, আমরা এ অনুষ্ঠানে আমরা অনেক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাহিত্যিক, বাংলা ভাষা নিয়ে যারা গবেষণা করে চর্চা করেন, তাদের আমন্ত্রণ করে আনতে পারি। ভবিষ্যতে আমরা ভালো করে করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেলায় আসতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আসায় তেমন কোনো মজা নেই। কারণ স্বাধীনতাই তো নেই। ডানে তাকাব নিরাপত্তা, বামে তাকাব নিরাপত্তা, সামনে নিরাপত্তা। এই নিরাপত্তার বাড়াবাড়িতে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে এলে মনে পড়ে ছোট বেলার কথা বা ছাত্র জীবনের কথা, প্রতিবারই আসতাম। কিন্তু আমার সেই স্বাধীনতাটা নেই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতা পাব।
শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীব্যাপী অর্থনৈতিক চাপ রয়েছে সব জায়গায়। তার থেকে আমাদের বাংলাদেশ বেশি দূরে নই। তারপরও আমরা দেশটাকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব, এই বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ। আমাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের জেলায় জেলায় বই মেলা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যন্ত আমরা বই মেলা নিয়ে যাব, যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পড়ার অভ্যাসটা সবারই থাকা উচিত। মা-বাবা যদি ছোটবেলা থেকে শেখায়, তাহলে কিন্তু পড়া হবে। যাদের ঘুম আসে না, ঘুমের ওষুধ খায়। দরকারটা কী? বইটই পড়লে, বই হাতে নিলে তাড়াতাড়ি ঘুম এসে পড়ে। একটা প্রবন্ধ, কঠিন একটা প্রবন্ধ পড়লেই ঘুমটা তাড়াতাড়ি আসবে। আর বেশি মজারটা পড়লে আবার ঘুম চলে যাবে। বেছে নিতে হবে এমন একটা বই, যেটা পড়লে তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ হয়ে আসে, তাহলে দেখবেন আপনারা আরামে ঘুমাবেন। আমি এটি অনুভব করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা একাডেমি ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। বাবার পথ অনুসরণ করে এ পর্যন্ত যত ভাষণ দিয়েছি, অন্তত ১৯ থেকে ২০ বার হবে, আমি কিন্তু বাংলা ভাষায়ই দিয়েছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৬ জনকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪
এসকে/এমইউএম/আরএইচ