ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

মাসব্যাপী আয়োজনের শেষভাগে মেলা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪
মাসব্যাপী আয়োজনের শেষভাগে মেলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: মাসব্যাপী শুরু হওয়া অমর একুশে গ্রন্থমেলা শেষ হতে আর মাত্র ছয়দিন বাকি। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে মেলা।

 
 
শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জনসমুদ্রে পরিণত হয় বাঙালির প্রাণের এই মেলা। শোক-শ্রদ্ধা-ভালবাসায় ভাষাশহীদদের স্মরণ করার পাশাপাশি একুশের চেতনাসমৃদ্ধ বইমেলায় জনজোয়ার নামে।
 
মাসব্যাপী মেলার এ দিনটিই ছিল সবচেয়ে বেশি উৎসব মুখর। এদিন বই বিক্রিও হয় রেকর্ড পরিমাণ।
 
তবে ২২তম দিনে এসেও মেলা ছিল অনেক জমজমাট। লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীদের সমাগমে কোনো কমতি ছিল না।

প্রতিবারই শেষ সময়ে মেলায় বই বিক্রি বেড়ে যায়। এসময় মেলায় পাঠকরাই বেশি আসেন। আগামী দিনগুলোতে বিক্রি যথারীতি ভালো হবে বলেই প্রত্যাশা করছেন প্রকাশকরা।  
 
শনিবার মেলা শুরু হয় সকাল ১০টায়। এদিন ছিল মেলার শেষ শিশু প্রহর। বেলা ৩টা পর্যন্ত শিশু প্রহরে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি অন্যদিনগুলোর তুলনায় বেশি ছিল। শিশু কর্নারের স্টলগুলোতে ছিল বই বিক্রির ধুম।
 
শনিবারের মেলায় নতুন বই
এদিন ২২টি গল্প, ২১টি উপন্যাস, ৩৭ কবিতা, ১৭টি ছড়া, আটটি প্রবন্ধ, নয়টি শিশুসাহিত্য, সাতটি জীবনী, একটি রচনাবলী, তিনটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক, দুইটি বিজ্ঞান বিষয়ক, দু’টি ভ্রমণ কাহিনী, দু’টি ইতিহাস বিষয়ক, সাতটি রম্য/ধাঁধা, একটি অনুবাদ ও ১৯টি অন্যান্যসহ মোট নতুন ১৬০টি বই এসেছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে ২০টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়। মেলায় এ পর্যন্ত নতুন বই এসেছে ২২৫১টি।
sisu_prohor 
শিশু প্রহরের আয়োজন
এদিন শিশুপ্রহরে অভিভাবকসহ স্বাচ্ছন্দ্যে বই কেনার সুবিধার্থে সকাল ১০টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়।

এছাড়াও সকাল ন’টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোরদের চূড়ান্ত সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক-শাখায় ১৫ এবং খ-শাখায় ১৫ প্রতিযোগী অংশ নেয়। এসময় বিচারক ছিলেন কল্যাণী ঘোষ, সুজিত মুস্তাফা এবং মাহমুদ সেলিম।  

মেলার শেষ দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
 
মূল মঞ্চের আয়োজন

বিকেল ৪টায় মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে দু’টি পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এগুলো উপস্থাপন করেন, অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা ও পার্থ সেন গুপ্ত।

বক্তারা বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান কৃষ্ণমোহন আপন মেধায় সমকালীন সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সমাজ-সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কর্মক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষক-যাজক-সাংবাদিক, গ্রন্থ-অনুবাদক ও রচয়িতা, সমাজ-সংগঠক, রাজনৈতিক চিন্তক ও দেশপ্রেমিক। অখণ্ড ভারতে তিনিই প্রথম বিশ্বকোষ-প্রণেতা।
 
সেকালের সীমাবদ্ধতার মধ্যে তাঁর প্রণীত বিদ্যাকল্পদ্রুম কোষগ্রন্থের বিস্তৃত পরিসর, বিষয় বৈচিত্র্য ও আপন গুণে ভারতীয় ভাষাসমূহের মধ্যে প্রথম বিশ্বকোষ-এর মর্যাদা অর্জন করেছে। দুষ্প্রাপ্য এই কোষগ্রন্থ তাই বিস্ময় জাগায়।
 
প্রবন্ধ দু’টিতে আরো বলা হয়, ডিরোজিও ভাবনায় উজ্জীবিত রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের একক পরিশ্রম ও সাধনায় বিদ্যাকল্পদ্রুম প্রণয়নে প্রাচ্য-প্রাতীচ্যের মিলনের প্রয়াস সার্থক হয়েছেন।

অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন অনিরুদ্ধ কাহালি, দিব্যদ্যুতি সরকার ও মোহাম্মদ আজম প্রমুখ।
 
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সুলতান হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘মাটির সুর সঙ্গীত পরিষদ’, সরওয়ার কামাল রবীনের পরিচালনায় ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী-ময়মনসিংহ’ এবং সুলতানা হায়দারের পরিচালনায় ‘সুকন্যা নৃত্যাঙ্গন’সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।

রোববারের আয়োজন
রোববার বিকেল চারটায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে ‘অধ্যাপক আবদুল হাফিজ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। এছাড়া তসিকুল ইসলাম রাজা, শাহিদা খাতুন এবং মোস্তফা তারিকুল আহসান আলোচনায় অংশ নেবেন।

সন্ধ্যায় থাকবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।