ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

বইমেলায় প্রতিবাদ সমাবেশ

হুমায়ুন আজাদ-অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীরা একই গোষ্ঠীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫
হুমায়ুন আজাদ-অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীরা একই গোষ্ঠীর ছবি : রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গ্রন্থমেলা থেকে: হুমায়ুন আজাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরাই ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যা করেছে। প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ূন আজাদের হত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি হলে মৌলবাদীরা আর মুক্তবুদ্ধির লেখকদের হত্যা করার সাহস পেত না।



 এ মন্তব্য করেছেন লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের একাংশ।

শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের তথ্যকেন্দ্রের সামনে প্রকাশক-লেখক-পাঠক ও পেশাজীবীর ব্যানারে হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার রাজিব, অভিজিৎ রায়সহ মুক্তমনা লেখকদের হত্যার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এই বইমেলাতেই হামলা করা হয়েছিল প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদকে। বৃহস্পতিবার রাতে আবার হত্যা করা হলো লেখক অভিজিৎ রায়কে।

সমাবেশে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, এদেশে প্রথাবিরোধীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এটা সভ্যতার লক্ষণ না। হুমায়ুন আজাদ হত্যার বিচার হলে হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হতো না। আমরা এসব হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।

অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, আমার জন্ম পাকিস্তানে, সেই পাকিস্তান ভেঙে আমরা বাংলাদেশ গড়েছি। আমরা কি আবার পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছি? যেদিন থেকে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় বসেছিল সেদিন থেকেই শিক্ষক-লেখকদের হত্যা করা হচ্ছে। হুমায়ুন আজাদ হত্যার বিচার হয়নি। আমরা নিরস্ত্র বলেই কি বিচার পাচ্ছি না? এটা বাংলাদেশের ওপর আঘাত, ফেব্রুয়ারির ওপর আঘাত। মৌলবাদীরা সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে যখন অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয় তখন আশপাশে অনেক মানুষ ছিল, তারা এগিয়ে আসেনি। পুলিশ ছিল পাশেই, তারাও এগিয়ে আসেনি। যারা আসেনি তারা কি নিজেদের নিরাপদ মনে করেন? আসুন, আমরা সবাই মৌলবাদীদের প্রতিরোধ করি।

সংসদ সদস্য ও কবি কাজী রোজী বলেন, আমরা এই প্রতিবাদ করছি সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের জন্য। আমরা হত্যাকারীদের ক্ষমা করিনি, ক্ষমা করব না।

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশন সমিতির সভাপতি ও আগামী প্রকাশনীর কর্ণধার ওসমান গনি বলেন, হুমায়ুন আজাদ, অভিজিৎ রায়ের লেখা আজীবন টিকে থাকবে। এদের লেখাকে হত্যা করা যাবে না। আমরা এসব হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, হত্যা কখনোই সমাধান হতে পারে না। আমরা সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। এ বর্বরতার অবসান চাই।

অন্যপ্রকাশের স্বত্ত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম বলেন, এভাবে আর কত লেখককে হত্যা করা হবে? আমরা ‘সহিংসতার বিপরীতে বই’ স্লোগানটি প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আর যেন কোনো লেখককে হত্যা করা না হয়, সরকার যেন সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

সমাবেশ থেকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ঘোষণা দেন, অভিজিৎ হত্যার প্রতিবাদস্বরূপ শনিবার সকাল ১১টার পরিবর্তে ১০টায় বইমেলা শুরু হবে।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ড. মুহাম্মদ সামাদ, কবি তারিক সুজাত, আসলাম সানী, রফিকউল্লাহ খান, হাবিবুল্লাহ সিরাজীসহ কবি-লেখক-পাঠক ও প্রকাশকরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫

** কেউ সন্তুষ্ট কেউ অসন্তুষ্ট বিক্রিতে
** পাঠকের হাতে বই, প্রকাশকের মুখে হাসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।