অমর একুশে বইমেলা থেকে: টানা তিনদিনের ছুটির বাঁধন। শুরু শুক্রবার।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেলা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেলো। যেন ছুটির দিনে ঘোরার মোক্ষম কেন্দ্র অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এদিন যারা ঘুরছেন তাদের বেশিরভাগই কিনছেন বই। প্রথম দিকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া ক্যাটালগে কলমের আঁচড় পড়া বইগুলো চাই তাদের।
![](files/Boi_mela__10__703249242.jpg)
তাই তো পছন্দের বই খুঁজে নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে বইপ্রেমীরা ছুটছেন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। শিশুপ্রহর না হলেও এদিন সকাল ১১টায় শুরু হওয়া মেলা জমে উঠতে সময় লাগেনি, বক্তব্য প্রকাশকদের।
মেলা ঘুরে কথা হয় নালন্দা প্রকাশনীর রেদওয়ানুর রহমান জুয়েলের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আমরা ৩০ হাজার টাকার মতো বিক্রি করেছি। শুক্রবার থেকে তিনদিনের ছুটি শুরু। আশা করছি রাত পর্যন্ত লাখের কাছাকাছি চলে যাওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া বড় বড় এবং জনপ্রিয় প্রকাশনীগুলো তো আরও ব্যাপক অংকে পৌঁছে যাবে বলে মনে করছি।
![](files/Boi_mela__11__857306957.jpg)
এখন যারা আসছেন তারা ক্রেতা, দর্শনার্থী নন, বলেও মন্তব্য করেন প্রকাশক জুয়েল।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা যায়, বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন পাঠকরা। পাঠকদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধিরাও জনপ্রিয় লেখক আর তাদের বইয়ের নাম উল্লেখ করে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। পাশের শিশু চত্বরে যথারীতি সিসিমপুরের আয়োজনে ছিল হালুম-ইকরি-টুকটুকির সঙ্গে শিশুদের নাচানাচি-গান ও সচেতনতামূলক বক্তব্য।
![](files/February2016/February19/Boi_mela__4__431131864.jpg)
এদিকে, বাংলা একাডেমি অংশে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব চলায় বাতাসে দেশের গান ভেসে আসে পাঠকের কানে। সব মিলিয়ে দারুণ এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহফুজুল হকের সঙ্গে দেখা। তিনি সপরিবারে মেলায় এসেছেন। বলেন, বিকেলের তীব্র ভিড় আন্দাজ করতে পেরেছি, তাই চলে এলাম সকালেই। শীত যেতে না যেতেই গরম পড়ে গেলো। তবুও তো মানুষের কমতি দেখছি না। এখন দুপুরেও লাইন, সকালে যখন ঢুকি তখনও লাইন ছিল ঢের। আসলে এখন যারা আসছেন তারা প্রকৃত ক্রেতা। বই ক্রেতারা কী আর এতো-শত গরম বোঝেন!
![](files/Boi_mela__20__497515045.jpg)
তিনি সঙ্গে নিয়ে এসেছেন স্ত্রী শামসুন্নাহার, ছোট বোন সুলতানা ইয়াসমীন, মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া ও ছেলে আবদুল্লাহ অহমেদকে। তারা জানালেন, কেমন যেন একটা বনভোজন মনে হচ্ছে পরিবেশটাকে। মেলার মঞ্চে আবার আবার গানও হচ্ছে, সর্বোপরি খুবই ভালো লাগছে।
শুক্রবার অর্থাৎ ফাল্গুনের সপ্তমদিন মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায়, চলবে যথারীতি রাত ৮টা পর্যন্ত।
এর আগে, সকাল ১০টায় মেলার মূলমঞ্চে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী। বিচারকমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন, শিল্পী কল্যাণী ঘোষ, সুজিত মোস্তফা ও আবু বকর সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রহিমা আখতার কল্পনা।
![](files/Boi_mela__6__360747839.jpg)
এছাড়া বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে 'রাধারমণ দত্ত: মৃত্যুশতবার্ষিকী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শুভেন্দু ইমাম। আলোচনায় অংশ নেবেন মাহফুজুর রহমান, বিশ্বজিৎ রায় ও নৃপেন্দ্রলাল দাশ। সভাপতিত্ব করবেন কবি মোহাম্মদ সাদিক। এছাড়াও সন্ধ্যায় রয়েছে যথারীতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে, অমর একুশে ও বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তীতে ‘পাললিক বর্ণমালা’র চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন রয়েছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে চলছে শিল্পী কালিদাস কর্মকারের মাসব্যাপী বিশেষ একক চিত্রপ্রদর্শনী। এর অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৪টায় একাডেমির মূল বিক্রয়-প্যাভিলিয়ন প্রাঙ্গণে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সম্মুখে তিনি ভাষা শহীদদের স্মরণে ২১ মিনিটের বাঁশি বাদনের সঙ্গে একটি শিল্পকর্ম রচনা করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
আইএ/এএ