ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

ভালোবেসে নতুন তীর্থে যেতে চান মিঠুন চৌধুরী

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬
ভালোবেসে নতুন তীর্থে যেতে চান মিঠুন চৌধুরী

চট্টগ্রাম: মিঠুন চৌধুরী, পেশায় সাংবাদিক। বয়সে তরুণ, ১৮ জানুয়ারি ১৯৮৪ যার জন্ম।

নেশা আছে লেখালেখির। থেমে থেমে জানান দেন, কাগজের সাহিত্য সাময়িকী কিংবা অনলাইন নিউজপোর্টালের সাহিত্য বিভাগে। এভাবে ১০ বছর পঙক্তিমালা সাজিয়ে প্রথম মলাটবন্দী হলেন তিনি।

‘নতুন তীর্থে যাবো’ মিঠুন চৌধুরীর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ৪০টি কবিতার বেশিরভাগই প্রেমের, ভালোবাসার। যেখানে ‘ঈশ্বরী বদল হয়েছে’ কিন্তু প্রেম তার জৌলুস হারাননি। বাকি ভাগটুকু সমাজের, সমকাল নিয়ে কবির আশাজাগানিয়া ভাবনা।

প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি জানতে চাইলে মিঠুন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কবিতা লিখলেও বই করার জন্যে প্রস্তুত ছিলাম না। এবার একুশের বইমেলায় প্রথম বইটি প্রকাশিত হলো। নিঃসন্দেহে বিষয়টি সুখের এবং খুবই ভালো লাগার। সত্যিকার ‍অর্থে ভালো লাগছেও। ’

‘মূলত অগ্রজ ও সহকর্মীদের প্রশ্রয় ছিল প্রথম বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে। এখানে বেশিরভাগ কবিতাই প্রেমের। যেখানে কবিতার ঈশ্বরী হয়তো বদল হয়েছে বারবার। আশাকরি, পাঠকের ভালো লাগবে। ’ যোগ করলেন কবি।

তরুণ কবিকে আর্শীবাদ করেছেন শক্তিমান কবি ও কথাশিল্পী বিশ্বজিৎ চৌধুরী। যিনি ভূমিকায় লিখেছেন, ‘‘হাজার বছরের সৃষ্টি ও নির্মাণের পথে মিঠুন চৌধুরী নবীন পথিক। নবীন, তবে আনাড়ি নন। এলোমেলো, উদ্দেশ্যহীন বিক্ষিপ্ত নয় তার পদচারণ। বরং যেটুকু পথ কেটে তার আসা, সবুজের বুক চেরা সেই মেঠোপথটি যে দিগন্ত অভিসারী, তার ‌ইঙ্গিত পাওয়া যায় প্রথম কাব্যগ্রন্থটিতেই।

সহযাত্রী তরুণদের মতো মিঠুনেরও কবিতার প্রধান বিষয় ‘প্রেম’। অবশ্য অন্যরকম করে বললে, পৃথিবীতে এ-যাবৎ যত কবিতা রচিত হয়েছে প্রেমই কি তার একমাত্র বিষয় নয়? কিন্তু এই প্রেম গতানুগতিকতার প্রবাহ নয়, মিঠুনের নিজস্ব জীবনবোধ, কল্পনার স্বাতন্ত্র্য একে নতুন মাত্রা দিয়েছে। পাঠকের কাছে তাই বহুলচর্চিত বিষয়টিও নতুন অনুভূতি ও উপলব্ধি নিয়ে হাজির হয়। ’’

‘ছাপাখানার ভূত’ বলে যে কথাটি প্রচলিত আছে, সেই ভূতের আছর ‘নতুন তীর্থে যাবো’তেও দেখা যায়। বইটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করলে সচেতন পাঠকের চোখে কালো অক্ষরে একটি ভুল চোখে পড়লেও পড়তে পারে। এর বাইরে কবির পরিচিতিতে ‘পৈত্রিক’ শব্দটি কি শুদ্ধ? ৩৫ পৃষ্ঠায় ‘রাত্রির কথা ২’ কবিতায় ‘অন্ধকারের গর্ভ পুষ্ট হলে/ভেঙে যায় ভৈররির ধ্যান/সে অন্য গল্প, অগ্রন্থিত নিষিদ্ধ পুরাণ। ’ এখানে কবি কি ‘ভৈরবীর ধ্যান’ লিখেছিলেন? ৪৫ পৃষ্ঠায় কবিতার শিরোনাম হয়েছে ‘মায়র খেলা’। অবশ্য সূচিতে ‘মায়ার খেলা’ ঠিকই আছে। এ ছাড়া কিছু শব্দ আছে যেগুলো নিয়েও তর্কের জন্যে তর্ক হতে পারে।

সে যাই হোক। মিঠুন চৌধুরীর গ্রন্থভুক্ত অনেক কবিতাই আছে যেগুলো বারবার পড়ার মতো। বারবার শোনার মতো। কবিতার যে ছন্দ, উপমা, চিত্রকল্প এককথায় বৈচিত্র্যপূর্ণ। একঘেয়ে মনে হয় না পাঠকের। নতুন চোখে, নতুন জীবন দেখার মতো একেকটি কবিতা। সাহস না থাকলে এমন উচ্চারণ আর কে করতে পারেন ‘মানুষের একান্ত কোনো নদী নেই/আজ, একান্ত আপন, এমনকি কবিদেরও/অনেক কবির আজ একটিই নদী/একটি নদীর জন্যে অনেকেই কবি। ’

একুশের বইমেলায় বইটি প্রকাশ করেছে চট্টগ্রামের বাতিঘর। সাদাসিধে অথচ প্রথম দেখাতে হাত বাড়ানোর মতো অসাধারণ প্রচ্ছদ করেছেন রাজীব দত্ত। সুখপাঠ্য বইটির দাম মাত্র ১৩০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।