ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

চতুর্থ দিনে ১৪১টি নতুন বই

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯
চতুর্থ দিনে ১৪১টি নতুন বই পছন্দের বই খুঁজে নিচ্ছেন বইপ্রেমীরা | ছবি: ডিএইচ বাদল

অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: বইমেলায় যারা আসছেন তারা শুধু তাকে রাখা বইয়ের ঘ্রাণ নেওয়া কিংবা নেড়েচেড়ে বই দেখেই রেখে দেননি। আগতদের অনেকেই প্রিয় লেখকের পছন্দের বইটি কিনে বাড়ি ফিরেছেন। 

জনপ্রিয় লেখকদের বই রয়েছে বেশি বিক্রির তালিকায়। পাঠকের পছন্দে ঠাঁই পেয়েছে পুরনো দিনের বইও।

তবে পুরনো বইয়ে পাঠক আগ্রহ থাকলেও এবার বইমেলায় নতুন বই প্রকাশ তুলনামূলক বেশি।

সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগের তথ্য মতে মেলার চতুর্থ দিনে নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ১৪১টি।  

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— গ্রন্থকুটির এনেছে মোহীত উল আলমের উপন্যাস ‘মুরলী’, জ্যোতি প্রকাশ এনেছে ড. তপন বাগচীর সমালোচনা গ্রন্থ ‘মহসিন হোসাইনের কবিতার বিষয় ও শরীরী নির্মাণ’, হাওলাদার প্রকাশনী এনেছে নীরা কাদরীর আবৃত্তির বই ‘আবৃত্তির নির্বাচিত কবিতা’, পালক পাবলিশার্স এনেছে কাজী খলীকুজ্জামান আহমদের প্রবন্ধ ‘অবস্থা বদলের জন্য ব্যবস্থা বদলের সন্ধানে’।

এছাড়াও নাগরী প্রকাশন এনেছে আবু হাসান শাহরিয়ারের কাব্যগ্রন্থ ‘বিমূর্ত প্রণয়কলা’, অন্যপ্রকাশ এনেছে শিহাব শাহরিয়ারের কাব্যগ্রন্থ ‘পড়ে থাকে অহংকার’, ইমদাদুল হক মিলনের গল্পের বই ‘ফেলে যাওয়া রুমালখানি’, নাসরীন জাহানের উপন্যাস ‘সিসেমের দ্বিতীয় দরজা’, পাঞ্জেরী এনেছে সাইফুল্লাহ মাহমদু দুলালের কবিতার বই ‘প্রেমের আগেই পড়েছি বিরহে’, নবযুগ প্রকাশনী এনেছে সনজীদা খাতুনের প্রবন্ধ ‘নজরুল মানস’, অনন্যা এনেছে কনক চাঁপার গল্পের বই ‘কাঁটাঘুড়ি-২’, সৈয়দ শামসুল হকের কবিতার বই ‘নায়লন গোলাপ টেবিলে’, মোস্তফা মামুনের কিশোর উপন্যাস ‘রাজু ভাই-মাইনাস শেলী আপা’ ইত্যাদি।

বিকেলে মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. নূহ-উল-আলম লেনিন।

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সুভাষ সিংহ রায়।

নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, ঐতিহাসিক বাস্তবতা হচ্ছে, ১৯৬৯-এ ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে তোফায়েল আহমেদ যখন শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপধিতে ভূষিত করার ঘোষণা দেন তখন মঞ্চে উপস্থিত ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া), ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন) ও ডাকসুসহ সকল ছাত্র নেতৃবৃন্দ রেসকোর্সের লক্ষ জনতার সাথে দু-হাত তুলে এই ঘোষণার প্রতি সমর্থন জানান। বস্তুত, সর্বসম্মতিক্রমেই শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। কেউ কেউ কিছু না জেনেই ভিত্তিহীন মতদ্বৈততার প্রশ্ন তুলতে চান, কেউ আবার ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি আগেই চয়ন ও ব্যবহারের কীর্তি দাবি করেন- যার কোনো ঐতিহাসিক মূল্য নেই।

তিনি বলেন, আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের ৫০ বছর পূর্তি এবং শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করার ৫০ বছর পূর্তিতে আমাদের মনে রাখতে হবে- এ দুটি ঘটনাই ছিল ইতিহাসের অনিবার্য পরিণতি এবং বাঙালি জাতির সম্মিলিত ইচ্ছার মহত্তম প্রকাশ।

আলোচকরা বলেন, ১৯৬৯ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় সময়ের নাম। স্বাধীনতার প্রস্তুতিপর্ব বলা চলে ইতিহাসের এই সময়খ-কে। ছাত্রজনতার দাবি কীভাবে গোটা দেশের, সমগ্র জাতির জনদাবিতে পরিণত হয় তার উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল সে সময়।

সভাপতির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ’৬৯-এ সমগ্র বাঙালি জাতি স্বাধীনতার অগ্নি-আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত হয়েছিল। সংগ্রামী ছাত্রজনতার সঙ্গে মিলেমিশে গিয়েছিল কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের মুক্তির দাবি। উপনেবিশের শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন সার্বভৌম বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন হয়েছিল আসাদ, মতিউর, সাজর্ন্টে জহুরুল হক, শামসুজ্জোহা প্রমুখের রক্তে। জাতীয় মুক্তি সংগ্রামকে গতিবেগ দিয়েছে মিথ্যা মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুর কারামুক্তির দাবি।

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন মাকিদ হায়দার এবং ইকবাল আজিজ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাহমুদা আখতার। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফাতেমা-তুজ-জোহরা, খায়রুল আনাম শাকিল, ইয়াকুব আলী খান, লীনা তাপসী খান এবং ক্যামেলিয়া সিদ্দিকা।

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার পঞ্চম দিন। এদিন মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘কবি সিকান্দার আবু জাফর: জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।  

এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কবি নাসির আহমেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান, ড. শিরীন আখতার এবং কবি বায়তুল্লাহ কাদেরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৯
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।