ঢাকা: অমর একুশে বইমেলায় সাধারণ দিনের তুলনায় বিশেষ দিবসগুলোতে বই বিক্রি বেড়ে যায়। দিবসগুলো সংক্রান্ত বইয়ের চাহিদাও থাকে শীর্ষে।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বইমেলায় পাঠক-ক্রেতাদের সমাগম ছিল বেশি। বিক্রিও সন্তোষজনক ছিল বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা।
দিবসকেন্দ্রিক বইবিক্রি নিয়ে কথা হয় প্রতীক প্রকাশনা সংস্থার প্রোপ্রাইটার নুর-ই-মুনতাকিম আলমগীরের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দিবস কেন্দ্রিক বইয়ের চাহিদা তো থাকেই। তবে সবাই একই ধরনের বই নেন না। আমাদের নারী সম্পর্কিত বই আছে। এবার ‘আগন্তুক’ নামে থ্রিলার লিখেছেন সোনিয়া তাসনিম খান। এছাড়া ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন শিক্ষা: সমাজদর্শন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ লিখেছেন গোলাম সরোয়ার। গোলাম মুরশিদের ‘রবীন্দ্রনাথের নারী ভাবনা’ ও ‘রাসসুন্দরী থেকে রোকেয়া’ প্রকাশিত হয়েছে। সবগুলো বইয়ের চাহিদা আছে।
বিশ্বসাহিত্য ভবন প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মী তানভীরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দিবসকেন্দ্রিক বইয়ের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত বইয়ের খোঁজ করেন পাঠকরা। আজকে নারী দিবসেও নারীদের বিভিন্ন অবদান নিয়ে লেখা বই বিক্রি হয়েছে।
ভিন্নমত জানালেন অনুপম প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মো. আরিফ। তিনি বলেন, শুধু একুশে ফেব্রুয়ারির দিন বেশি বিক্রি হয়। বর্তমানে পাঠকের চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। অধিকাংশই ছবি তোলা, আড্ডার জন্য আসেন। অনেকে বই হাতে নিয়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলে চলে যান।
সব্যসাচী প্রকাশনী থেকে নারীদের নিয়ে লেখা বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এই স্টলের বিক্রয়কর্মী তাসনুভা বাংলানিউজকে বলেন, এবার আমাদের সোভিয়েত নারীর দেশে, নারীবাদ প্রসঙ্গে, বীর মাতা ফয়েজুন, মৌন মিছিল নামে চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।
অমর একুশে বইমেলার ২২তম দিনে নতুন বই এসেছে ৭৭টি। বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘সঙ্গীত ও কবিতায় একুশের চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইম রানা। আলোচনায় অংশ নেন ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, এ এফ এম হায়াতুল্লাহ এবং মুস্তাফিজ শফি। সভাপতিত্ব করেন নিরঞ্জন অধিকারী।
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নারী সাংবাদিক উদিসা ইসলামের ‘রাষ্ট্রনায়ক’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশ্ব সাহিত্য ভবন প্যাভিলিয়নে এই মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭২-৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাজ, বক্তৃতা, কর্মসূচী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে প্রতিদিনের সংবাদ পর্যালোচনা করে বইটি রচিত হয়েছে। পুরো বইকে ‘প্রস্তুতি পর্ব, স্বাধীন দেশে ফেরা, দেশ পুনর্গঠন পর্যায়, জনতার আদালতে, মানুষের বন্ধু, আটক বাঙালিদের ফেরানো, ছড়ানো ছিটানো ও নিশ্চিহ্ন করতে ষড়যন্ত্র’ সাতটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে।
বইটির লেখক উদিসা ইসলাম বলেন, ২০২০ সালে যখন মুজিববর্ষ উপলক্ষে কী করণীয় সেটি নিয়ে আমি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করি সেখানে নানা পরিকল্পনা হচ্ছিল, সেই সময়ে আমার মনে হয়েছিল, সেই চার বছরের পত্রিকাগুলো থেকে যদি বঙ্গবন্ধুর কথা তুলে আনা যায় তাহলে সত্যি তিনি কী ভাবছিলেন, দেশের জন্য কী করতে চাইছিলেন, কোনটা করতে পারছিলেন না, সেটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২২
এসকেবি/এমজেএফ