ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

বিশ বছর ধরে বইমেলার টানে দেশে আসেন তিনি

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
বিশ বছর ধরে বইমেলার টানে দেশে আসেন তিনি জসিম মল্লিক

ঢাকা: জসিম মল্লিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।

কলেজ জীবন থেকেই তাঁর সাহিত্য চর্চার হাতেখড়ি এবং দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক-এ নিয়মিত লিখছেন। গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা এবং সমাজ সচেতনমূলক বই লিখেছেন প্রায় ৪০টি।  

গত বিশ বছর ধরে কানাডায় বসবাস করলেও দেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি রয়েছে তাঁর গভীর অনুরাগ। তাইতো প্রতি বছর বাঙালির প্রাণের বইমেলার টানে দেশে ছুটে আসেন তিনি। একইসঙ্গে কানাডার টরেন্টোতেও বইমেলার আয়োজন করেন এই লেখক।
 
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বইমেলার অনন্যার প্যাভিলিয়নে বাংলানিউজের সঙ্গে নিজের লেখালেখি, বইমেলা ও তরুণ প্রজন্ম নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন তিনি। জসিম মল্লিক বলেন, প্রতি বছর মেলায় আসি। পাঠকদের সঙ্গে মেলবন্ধনের সুযোগ মেলে। বিদেশে থাকার কারণে দেশের প্রতি টানটা গভীরভাবে অনুভব করতে সক্ষম হই। গতবার করোনার কারণে মেলায় আসতে পারিনি।
 
নিজের লেখার শুরুর প্রসঙ্গে বলেন, সাংবাদিকতা দিয়ে আমার লিখালিখি শুরু হয় এবং এর ধারাবাহিকতায় বেশকিছু বইও লিখেছি এবং সেগুলো বিগত বছরগুলোতে মেলায় প্রকাশও হয়েছে। আমি ১৯৮৩ সালে তৎকালীন’সাপ্তাহিক বিচিত্রায়’ যোগদান করি। এরপর ১৯৯৮ সালে সাপ্তাহিক ২০০০-এ যোগ দিই। দীর্ঘ প্রায় চার দশকের সাংবাদিকতা ও লেখালেখির কারণে বিপুল অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। অভিজ্ঞতার আলোকে লেখায় জীবনের চরম সত্য আর বাস্তবতাকে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। সামাজিক এবং সম্পর্কের বিষয়, মানুষের সম্পর্কের মনোজাগতিক বিষয় সেটি নিয়ে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
 
তথ্য-প্রযুক্তির প্রভাবের কারণে নতুন পাঠক তৈরি প্রত্যাশিত হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না যে সোশ্যাল মিডিয়া বা বিশ্বায়নের কারণে পাঠক কমে গেছে। তাহলে প্রতিবছর কেন মেলার পরিধি এবং প্রকাশনা বাড়ে? প্রতিবছর কেন বই প্রকাশ ও বিক্রি বেশি হয়? তবে হ্যাঁ, নতুন প্রজন্মকে আরো বেশি বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। এটা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে যদি আমাদের কীর্তি, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের ২১, আমাদের বৈশাখ, আমাদের বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা - এই বিষয়গুলোকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারি তাহলে আমাদের ভাষার ওপর অন্য ভাষার যে আধিপত্য তা ধ্বংস করা যাবে। এভাবেই সংস্কৃতির যে আগ্রাসন এটাকে ধ্বংস করতে হবে।
 
বইমেলা নিয়ে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন,  আমার বেশকিছু বই বের হতো মেলায়। তখন পাঠক এসব পড়ে ভালো মতামত দিত যা আমাকে বই লিখার প্রতি আরো বেশি উৎসাহিত করতো। আমার প্রায় ৪০টার মতো বই প্রকাশিত হয়েছে। এই বইগুলো লিখতে আমার প্রায় ৪১ বছর সময় লেগেছে।
 
লেখকের প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে-অভিমান (প্রকাশক-ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ), আটলান্টিক পাড়ের উপখ্যান (রিদম প্রকাশনা সংস্থা), একজন মাধবী (সময়), টানা পোড়েন (অনন্যা), নীল জলে তরঙ্গ (দিব্য প্রকাশ), জ্ঞান বিকাশ থেকে প্রকাশিত নক্ষত্রের গান ও তোমার জন্য আমি, তোমার কাছে যাবো (অনন্যা),স্পর্শ (অনন্যা), ছোট গল্পের মধ্যে জীবন বারে বারে আসে (অনন্যা),হাডসন থেকে টেমস (অনন্যা), স্মৃতিকথার মধ্যে রয়েছে-স্মৃতির নির্জণতা (অনন্যা), প্রবন্ধের মধ্যে রয়েছে নক্ষত্রের আগুন ভরা রাতে (অনন্যা)।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
এসকেবি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।