ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

বাজেট

বাজেট বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়: পিআরআই পরিচালক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
বাজেট বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়: পিআরআই পরিচালক

ঢাকা: এবারের বাজেট বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অর্থনৈতিক বাস্তবতা বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি বলে জানিয়েছেন পলিসি রিসার্চ  ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।

শনিবার (৩ জুন) দুপুরে তেজগাঁওয়ে এফডিসিতে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার প্রেক্ষাপটে ‘মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা গৌণ’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। ছায়া সংসদে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা অংশ নেন।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঘোষিত বাজেট বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের অভাবে প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় না। বিগত ১১ অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড টার্গেটকৃত কর আহরণ করতে পারেনি। রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবারের বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।

তিনি বলেন, সরকারের টাকার ভয়ানক অভাব। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে অর্থ সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। গত ১৫ বছরে ১ শতাংশ বিনিয়োগ বাড়েনি অথচ আগামী অর্থ বছরে ৪ শতাংশ বিনিয়োগ বৃদ্ধির টার্গেট নেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হলেও জনসেবার মান বাড়েনি বরং দুর্নীতি রেড়েছে। প্রশাসন নিজেরা নিজেদেরই সেবা দেয়। দেশে জনসেবার বদলে জনশাসন চলছে। ব্যাপক দুর্নীতির কারণে টাকা পাচার বাড়ছে। টাকা পাচার রোধে রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে হবে।  

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এবারের বাজেটে বেকারত্ব দূরীকরণ, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, নব্য দরিদ্রদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা, অনানুষ্ঠানিক খাতে শ্রমিকদের জীবিকার নিরাপত্তা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স আহরণে প্রণোদনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়েও সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানিমুখী বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। একদিকে স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলা হচ্ছে। অন্যদিকে বাজেটে অন্যতম অপরিহার্য শিক্ষা উপকরণ কলমের ওপর করারোপ করা হয়েছে, যা আমাদের হতাশ করেছে। আমরা একদিকে পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহারের গুরুত্ব দিচ্ছি। অন্যদিকে বাইসাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানির ওপর করারোপ করে স্মার্ট ক্লাইমেটকে নিরুৎসাহিত করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যেক টিআইএন-ধারীদের ন্যূনতম কর ২০০০ টাকা দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত। কারণ যার আয় করসীমার নিচে তাকে কর দিতে বাধ্য করা অযৌক্তিক।

এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, শারমীন রিনভী ও মুনিমা সুলতানা প্রমুখ। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৩
এমএমআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।