ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি ইতিবাচক, তবে পর্যাপ্ত নয়

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৪
তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি ইতিবাচক, তবে পর্যাপ্ত নয়

ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যের ওপর কিছুটা কর বৃদ্ধি করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো ফ্রি কিডম (CTFK) এর কান্ট্রি ডিরেক্টর তাইফুর রহমান।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সংসদ ভবনে বাজেট অধিবেশন চলাকালে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।



তাইফুর বলেন, বাজেটে সিগারেট ও বিড়ির মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তা এসব পণ্যের ব্যবহার কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়। পক্ষান্তরে জর্দ্দা ও গুলের ওপর সম্পূরক শুল্কের হার দ্বিগুণ করা হয়েছে যা অত্যন্ত ইতিবাচক। তবে এসব পণ্যের ওপর প্রযোজ্য করের হার কঠোরভাবে প্রয়োগ করা না হলে এ বৃদ্ধি খুব একটা কাজে আসবেনা।
 
তিনি বলেন, বাজেট বক্তৃতায় তামাক পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে যেসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপিত হয়েছে তা অত্যন্ত ইতিবাচক। এর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর বৃদ্ধির ভূমিকা বিষয়ে সরকারের ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে।

তাইফুর বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর বৃদ্ধি করা হয়েছে জর্দ্দা ও গুলের উপর। এ দু’টি তামাকপণ্যের ওপর প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্কের হার ৩০ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৬০ ভাগ করা হয়েছে। এজন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।   তবে এসব পণ্যের ওপর প্রযোজ্য কর আহরণের ক্ষেত্রে বর্তমান করুন অবস্থা বজায় থাকলে এ কর বৃদ্ধি খুব একটা কাজে আসবেনা। জর্দ্দা ও গুলের ওপর প্রযোজ্য কর আহরণের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ জরুরি।

তিনি বলেন, সিগারেটের ওপর প্রযোজ্য করের হার কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা ইতিবাচক হলেও পর্যাপ্ত নয়। সস্তা ও মধ্যম দামের সিগারেটের কর হার ৪ ভাগ, উচ্চ দামের সিগারেটের কর হার ২ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং অতি উচ্চ দামের সিগারেটের কর হার অপরিবর্তিত রয়েছে। তাছাড়া, সব স্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে বিভিন্ন হারে: ৯.৫৭ ভাগ থেকে ১৯.০৫ ভাগ পর্যন্ত। এরফলে সিগারেটের দাম কিছুটা বাড়বে, তবে বিশেষ করে সস্তা দামের সিগারেটের দাম খুব একটা বাড়বেনা, অর্থাৎ আগের মতোই সস্তা থেকে যাবে। এ ধরনের সিগারেটের দাম শলাকা প্রতি বৃদ্ধি পাবে মাত্র ১৩ পয়সা। আর সবচেয়ে বেশি দামের সিগারেটের কর হার অপরিবর্তিত রেখে শুধু মূল্যস্তর বৃদ্ধির ফলে এ ধরনের সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো লাভবান হবে। এভাবে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোকে বেশি করে মুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দেওয়া হলো। তামাক কোম্পানিকে সুবিধা প্রদান করে তামাকনিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

বিড়ির মূল্য (করসহ) বৃদ্ধি করা হয়েছে প্রায় ১৫ ভাগ, যা বিড়ির অতি অল্প মূল্যের বিবেচনায় একেবারেই পর্যাপ্ত নয়। বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়েছে, করসহ প্রতি প্যাকেট ফিল্টারবিহীন বিড়ির মূল্য ৫.৩৫৪ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৬.১৪ টাকা করা হয়েছে।   অর্থাৎ, প্রতি শলাকা বিড়ির মূল্য বাড়বে মাত্র ৩ পয়সা। এছাড়া, ‘ফিল্টারযুক্ত’ বিড়ির দামও বাড়ানো হয়েছে। বিড়ির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্কের হার ও ভিত্তিমূল্য উভয়ইবৃদ্ধি করা হয়েছে, যা ইতিবাচক। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বিড়ির পক্ষাবলম্বন করে চিঠি প্রেরণ করায় সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করেছেন, যা প্রশংসনীয়।

এছাড়া, প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের তামাক পণ্যের ওপর ১ ভাগ হারে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়নসারচার্জ’ আরোপ করা হয়েছে। তামাকপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে এ পদক্ষেপের খুব একটা প্রভাবনা থাকলেও এ উৎস থেকে অর্জিতরাজস্ব তামাক নিয়ন্ত্রণ তথাজন স্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।