ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বাজেট

ভর্তুকি বাড়েনি কৃষিতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১৫
ভর্তুকি বাড়েনি কৃষিতে

ঢাকা: সদ্য শেষ হয়ে যাওয়া অর্থবছরে কৃষিতে ভর্তুকির পরিমাণ যা ছিল নতুন অর্থ বছরেও তাই আছে। নতুন বাজেটে এক টাকাও বাড়েনি কৃষি ও কৃষকের ভর্তুকির পরিমাণ।



জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে কৃষি মন্ত্রণালয়ে সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল নয় হাজার কোটি টাকা।

আর নতুন অর্থবছরের (২০১৫-১৬) প্রস্তাবিত মোট বাজেটের মধ্যে (দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা) কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। যা গত বছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৪২১ কোটি টাকা বেশি। কিন্তু ভর্তুকির পরিমাণ গত বছরের মত নয় হাজার টাকাই আছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট থেকে পাওয়া গেলো এসব তথ্য।

তবে কৃষির ‍উন্নয়নকে ধরে রাখার জন্য বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কৃষি সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরেছেন। এর মধ্য অন্যতম হলো সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা, কৃষি উপকরণ সহায়তা, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও সেচ সুবিধার মাধ্যমে কৃষি জমির আওতা সম্প্রসারণ, কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান, কৃষকদের ডাটাবেজ তৈরিকরণ, কৃষকদের পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান, প্রশিক্ষণ, শস্য বহুমুখীকরণ, কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি, জৈব সারের উৎপাদন ও ব্যবহারে উৎসাহিতকরণ, বীজ সরবরাহসহ বিভিন্ন কার্যক্রম। এসব কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, কৃষিখাতে বিদ্যমান প্রণোদনার মধ্য রয়েছে কৃষিঋণের শতকরা ৬০ ভাগ শস্য খাতে বিতরণের নির্দেশনা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে কৃষকদের জন্য ১০ টাকা ব্যাংক হিসাব খোলা, বর্গাচাষিদের ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য পুন:অর্থায়ন স্কিম প্রবর্তন, আমদানি বিকল্প ফসল চাষে চার শতাংশ রেয়াতি সুদে ঋণ প্রদান ইত্যাদি।

বাজেট বৃক্ততায় কৃষি গবেষণাকে প্রাধান্য দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, উচ্চফলনশীল শস্যের জাত উদ্ভাবন, অভিযোজন কৌশল ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ এবং লবণাক্ততা, জলবদ্ধতা ও খরাসহিঞ্চু ধানের জাত উদ্ভাবনসহ সার্বিক কৃষি গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

কৃষি মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন অর্থবছরের জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভর্তুকির পরিমাণ নয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ নয় হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করে।  

তবে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো উচিত বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতি ও বাজেট বিশ্লেষকরা। না হলে উৎপাদন খরচ, দ্রব্যের মূল্য এবং কৃষকের ওপর প্রভাব পরবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু ইউসুফ বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদনমুখী করে রাখা সহজ হয়। তাই এর পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি সঠিক ব্যবহার খুবই গুরুত্বপুর্ণ।

তিনি বলেন, ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি না পেলে কৃষকদের উৎপাদন খরচের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কেননা ভর্তুকির পরিমাণ না বাড়লেও উৎপাদন খরচ ঠিকই বাড়বে। আর উৎপাদন খরচ যদি বৃদ্ধি পায় কিন্তু সেই তুলনায় দাম না পেলে কৃষকরা হতাশ হয়ে অন্য কর্মে চলে যাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৫
একে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।