ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বাজেট

‘অর্থনীতির ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৮ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৫
‘অর্থনীতির ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা’ ছবি: কাশেম হারুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশ এমন অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে অর্থনীতি রাজনীতিকে প্রভাবিত করছে। আর অর্থনীতি এমন স্থানে পৌঁছেছে তাতে, দেশে যে ধরণের প্রতিবাদ হচ্ছে, তা আর বেশিদিন মোকাবেলা করতে হবে না।

অর্থনীতির এ ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই বাজেট ও জিডিপির লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে।
 
শুক্রবার (৫ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
 
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংক  গর্ভনর ড. আতিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের একটি অংশ সরকারি খাত। আর একটি অংশ হলো বেসরকারি খাত। যখন একটি খাতে বিনিয়োগ হয় না তখন অপর খাতে তা বাড়ানোর প্রয়োজন হয়। আমি এবার সেটাই করেছি।
 
কালো টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, বাজেটে কালো টাকার বিষয়ে কিছু বলার প্রয়োজন ছিলো না। কারণ আয়কর আইনেই কালো টাকার কথা বলা হয়েছে। এ আইনের মাধ্যমেই প্রচলতি নিয়মে জরিমানা দিয়ে কালো টাকা বিনিয়োগ করা যাবে।
 
মোবাইলে ৫ শতাংশ কর আরোপের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মোবাইল খাত বেশ প্রসারিত হয়েছে। যে ৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে, তা তারা দিতে পারবেন।
 
শিক্ষাখাতের বরাদ্দের বিষয়ে মুহিত বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৪ শতাংশের মতো বরাদ্দ রাখা হয়। আমরা তার ধারেকাছেও নেই। খুব সহজে আমরা সেখানে যেতে পারবো বলে মনে হয় ‍না। তারপরও শিক্ষাখাতে আমাদের যথেষ্ট বরাদ্দ আছে।
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা ভেরি হাই (খুব উচ্চ)। তবে আমার রাজস্ব বোর্ড যথেষ্ট প্রস্তুত। রাজস্ব বোর্ডের লোকবল দুই গুণ বাড়ানো হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ধরতেই হবে।
 
সরকারের ব্যাংক ঋণের কারণে বেসরকারিখাত সমস্যায় পড়বে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে দিতে বলেন অর্থমন্ত্রী।
 
এরপর আতিউর বলেন, বর্তমান অর্থবছরে সরকার ব্যাংক থেকে তেমন ঋণ নেয়নি। বাজারে এখন তারল্য যথেষ্ট পরিমাণে আছে। এখান থেকে ট্রেজারি বন্ডের মাধ্যমে সরকার টাকা নিলে তা বেসরকারিখাতে বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না। বাজারে হাহাকার বা টাকার অভাব নেই। তাই সরকারের ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না।
 
এ সরকার চাল আমদানি করেনি উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে শুল্ক উঠিয়ে দেওয়ার কারণে বেসরকারিখাতে কিছু চাল আমদানি করা হয়। তবে সে চালের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ সরকার কোনো চাল আমদানি করেনি, আর করারও প্রয়োজন নেই।
 
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, যারা দেশের অগ্রগতি চায় না, তারাই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলছেন। যখন প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের কথা বলেছিলেন তখন, এটিকে উচ্চাবিলাসী বলা হয়েছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার কথাকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন।
 
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকতেই হবে। তবে রাতারাতি দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। কারণ আমাদের কারও হাতে আলাদিনের চেরাগ নেই, বলেন তিনি।
 
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বাজেটের জন্য অর্থমন্ত্রীকে ‘গোল্ডেন এ প্লাস’ দিয়ে বলেন, চলমান অর্থনীতিকে সচল রাখতে যেখানে যে বরাদ্দের প্রয়োজন অর্থমন্ত্রী তা রেখেছেন। এজন্য অর্থমন্ত্রীর গোল্ডেন এ প্লাস প্রাপ্য।
 
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে এডিপির আকার ছিলো ২১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এডিপির জন্য বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বরাদ্দের এ প্রস্তাব বাস্তবসম্মত। আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারবো।
 
নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে কয়েকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করলেও তার কোনো উত্তর দেননি অর্থমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে এসে অর্থমন্ত্রী বলেন, সব সময় সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব না।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৯ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৫
এসআইএস/এমআইএস/এএসএস/আরএম

** ‘যারা অগ্রগতি চান না, তারাই বলছেন বাজেট উচ্চাভিলাষী’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।