ঢাকা: দেশে কোমল পানীয় চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ খাত থেকে প্রতিবছর সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট আদায়ের পরিমাণও বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে।
এ খাতে স্থানীয় পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট কমানো হলে প্রচুর বিনিয়োগ আসবে। বাড়বে কর্মসংস্থান, ব্যবহার বেড়ে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।
রোববার (২৪ এপ্রিল) এনবিআর সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি মো. হারুনুর রশিদ বলেন, দেশীয় ও বহুজাতিক নয়টি কোম্পানি কোমল পানীয় উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।
দেশে প্রতিবছর কোমল পানীয় ১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার উৎপাদন ও ১ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকার বিপণন বাজার সৃষ্টি হয়েছে।
গত পাঁচবছরে এ খাতে ৩ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। সরকারের প্রতিবছর এ খাত থেকে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক প্রায় ৬২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
গত ১৫ বছর এ খাতে দেশীয় ও বহুজাতিক বিনিয়োগ বাড়লেও দু’বছর আগে হঠাৎ করে অভ্যন্তরীণ করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ায় বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে আসে।
তিনি বলেন, সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়। ভ্যাট ১৫ শতাংশ ও সম্পূরক শুল্কসহ মোট ৪৩.৭৫ শতাংশ কর দিতে হয়।
ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার ও ভুটানের বেভারেজে এতো উচ্চ কর নেই। বাংলাদেশে কোমল পানীয় ভোক্তা শহরে বেশি হলেও গ্রামে তেমন নেই।
কয়েকটি দেশের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, মেক্সিকোতে বছরে মাথাপিছু ৬০২.৩৬ লিটার, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫৩.৬৯ লিটার, জার্মানিতে ৪৪৭.৭০ লিটার, ভারতে ১৮.৭১ লিটার, শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৫৮ লিটার, ইন্দোনেশিয়ায় ১৫.৫২ লিটার, মায়ানমারে ১৬.৭৮ লিটার, ভিয়েতনামে ৪০. ১৩ লিটার ও বাংলাদেশে ১১.৯৮ লিটার।
তিনি বলেন, ভারতে কোমল পানীয়ে ৩৫.৩ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২৯.২ শতাংশ, নেপালে ২৪.২ শতাংশ, ভুটানে ৩০ শতাংশ ও বাংলাদেশে ৪৩.৭৫ শতাংশ কর দিতে হয়।
বাংলাদেশে গ্রাম পর্যায়ে মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ কোমল পানীয় পান করেন। ৭০ শতাংশ মানুষ এখনো কোমল পানীয় থেকে দূরে। তাদের কোমল পানীয় খাওয়াতে হলে মূল্য কমাতে হবে। কোমল পানীয় পান ১১.৯৮ লিটার থেকে ২০ লিটারে যেতে পারলে বাজার সম্প্রসারিত হবে, বিনিয়োগ বাড়বে এবং রাজস্ব পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
আইসক্রিম, কেক, চকলেট, বিস্কুট, মিষ্টান্ন, দই, জুস ইত্যাদিতে সম্পূরক শুল্ক নেই। তাহলে কোমল পানীয়তে এ শুল্ক থাকবে কেন। বিনিয়োগে লাভ না পেলে বিনিয়োগ কেন হবে।
প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে সভায় এনবিআর সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ২০১৪ সালে একটি পরিস্থিতির কারণে ১৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সভায় এনবিআর সদস্য পারভেজ ইকবাল, তন্দ্রা শিকদার, আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশির উদ্দিনসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৬
আরইউ/জেডএস