ঢাকা: পরীক্ষামূলক জেলা বাজেট ‘টাঙ্গাইল’-এর কোনো সাফল্য না পাওয়ায় ভবিষ্যতে থাকছে না জেলা বাজেট। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় টাঙ্গাইল জেলার জন্য পরীক্ষামূলক ‘জেলা বাজেট’ ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
কিন্তু ওই বাজেটের অর্থ কোন খাতে এবং কীভাবে ব্যয় হয়েছে তার হিসাব দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। তাই ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে পৃথকভাবে জেলা বাজেট থাকছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে টাঙ্গাইল জেলার জন্য এক হাজার ৯০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এই টাকার ব্যয় ও খাতের কোনো বর্ণনা পাওয়া যায়নি।
এরপরও পরবর্তী দুই অর্থবছরে জেলা বাজেট ঘোষণা করা হয়। এতে টাঙ্গাইলসহ খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগের একটি করে জেলাকে এর আওতায় আনা হয়।
পৃথকভাবে বাজেট ঘোষণা করলেও ওই এলাকাগুলোতে কোনো উন্নয়ন হয়নি। অর্জিত হয়নি জেলা বাজেটের লক্ষ্যমাত্রাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জেলা বাজেট বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের স্বচ্ছ ধারণার অভাব, বিশেষ করে জেলা বাজেট কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়েও দিক নির্দেশনা ছিলো না। ফলে কাগুজে জেলা বাজেট কার্যকর বাস্তবায়ন হয়নি।
সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রণয়নের আগে জেলায় পৃথক বাজেটের দাপ্তরিক কাগজপত্র পাঠানো হয়নি। জেলা বাজেটের আওতায় বাজেট পরিকল্পনা, রাজস্ব আহরণ, ব্যয়সহ এসব জেলাকে কোনো বিষয়ে নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।
ফলে কেন্দ্রীয় বাজেটের আওতায় প্রতি বছরের মতো এবারের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে প্রতিটি জেলার জন্য ১০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু এ টাকা খরচের সক্ষমতা, অনুমোদনের পদ্ধতি বিবেচনা করে তা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তবে অর্থমন্ত্রীর একান্ত ইচ্ছার কারণে জেলা পরিষদের জন্য আলাদা ৩২ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে চলতি অর্থবছরের বাজেটে। কিন্তু তাও কাজে আসেনি।
জেলা পরিষদের প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের উন্নয়ন কাজে দ্বন্দ্বের ‘আশঙ্কা’য় এ টাকার খবর কাউকে জানানোই হয়নি।
অর্থনীতিবিদ ড. খলীকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত জেলা বাজেট কার্যকর করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার শক্তিশালীকরণের বিকল্প নেই। এজন্য প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণও প্রয়োজন।
অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জেলা বাজেট কার্যকর করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত দরকার। অর্থমন্ত্রী যতই চেষ্টা করুন না কেন?
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জেলা বাজেটের জন্য আলাদাভাবে কাজ করতে হবে। কিন্তু সেটি করেনি ওই মন্ত্রণালয়। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি। তাই জেলা বাজেট থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৬
এসই/এমএ