ঢাকা: জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বিপুল অর্থায়ন শুধু সরকারের তরফ থেকে যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন সহযোগীদের অবশ্যই সহায়তা দিতে হবে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সরকার এবং উন্নয়ন সহযোগীদের মাঝে কপ-২৮ সামনে রেখে জলবায়ু সংক্রান্ত অগ্রাধিকারভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
জলবায়ুতে মানুষের সৃষ্ট ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় ১৫৪টি দেশ ১৯৯২ সালে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। তারপর থেকে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন কপ প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি কমিয়ে আনার উপায় অর্জ কী অগ্রগতি হয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ও অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে মিশরে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘কপ-২৭’ এর সাফল্যগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি ‘ক্ষতি ও লোকসান’ তহবিল সৃষ্টি করা, যা অভিযোজন বিষয়ক বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনের অনুকূল একটি চুক্তি এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহে জলবায়ু প্রযুক্তি-নির্ভর বিভিন্ন সমাধান কাজে লাগানোয় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘কপ-২৭’-এ একটি নতুন পাঁচ বছরব্যাপী কার্যক্রম-নির্ভর কর্মসূচি প্রণয়ন। অবশ্য ক্ষতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেওয়ার বিষয়টি আরও এক ধাপ পিছিয়ে যাওয়ায় ১.৫ ডিগ্রি লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সরকার এবং উন্নয়ন সহযোগীদের মাঝে জলবায়ু সংক্রান্ত অগ্রাধিকারভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন সংক্রান্ত ২৭তম জাতিসংঘ কাঠামোগত সম্মেলনের (কপ ২৭) পরবরর্তীতে এবং ‘কপ-২৮’ এর জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিক কার্যক্রমের বিষয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ, যার দ্রুত উন্নয়ন অত্যাবশ্যক এবং সেলক্ষ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থায়ন ও প্রযুক্তির সরবরাহ প্রয়োজন। জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা, জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান এবং মুজিব জলবায়ু ও সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সহায়তা প্রয়োজন। অধিকন্ত, বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি পর্যায়ে ধরে রাখার লক্ষ্যে উচ্চহারে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণকারী দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের নিঃসরণ কমিয়ে আনতে হবে, যাতে আমাদের মতো দেশগুলোকে ক্রমবর্ধমান গতিতে এবং ঘন ঘন আঘাত হানতে থাকা জলবায়ু বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা যায়।
বাংলাদেশস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনের উন্নয়ন পরিচালক ম্যাট ক্যানেল বলেন, ব্রিটিশ সরকারের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা একটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়। এই পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে খাপ খাওয়ানোর লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দেওয়া পাশাপাশি ১.৫ ডিগ্রি সীমা ধরে রাখার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখছি।
২০২২ সালের নভেম্বরে মিশরের শারম এল-শেখ এলাকায় ‘কপ২৭’ অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ‘কপ-২৮’ আয়োজিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
টিআর/এমজেএফ