ঝিনাইদহ: তীব্র গরম আর তাপদাহে পুড়ছে ঝিনাইদহ জেলার ছয়টি উপজেলার মানুষ। সেই সঙ্গে হাঁসফাঁস করছে সব ধরনের পশুপাখিরা।
জানা গেছে, ঝিনাইদহের সদর উপজেলার গোপালপুর এলাকার ইবাদত হোসেন জানান, দুই সপ্তাহ আগেও তার সেচ পাম্পে পর্যাপ্ত পানি উঠত। এখন মাটির গভীরে মেশিন বসিয়েও পানি উঠছে না। ভারী বৃষ্টি না হলে ইবাদতের মতো ঝিনাইদহের হাজারও কৃষক জমিতে সেচ নিয়ে বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা বলছে, ইরি ধানের সেচ কাজে এবং পুকুর খনন করে মাছের চাষের জন্যে মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।
ওই এলাকাতেই খবর নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার বেশিরভাগ বিল বাঁওড় , জলাশয় ও পুকুর-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। বিশেষ করে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ পানি শুকিয়ে গেছে। এসব নদীর তলদেশে কৃষকেরা এখন ধানচাষ করছেন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার ছয় উপজেলায় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক নলকূপে পানি কম উঠছে। সাধারণত ২০-৩০ ফুট নিচে পানির স্তর পাওয়া যায়। কিন্তু এখন ৩০-৪০ ফুট নিচেও পানির লেয়ার মিলছে না। জেলা কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন বলছে, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও কয়েক হাজার গভীর ও অগভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। এসব নলকূপ থেকে নিয়ম না মেনে পানি উত্তোলন করায় স্তর নেমে যাচ্ছে।
বাজার গোপালপুর এলাকার মনজুরুল আলম জানান, তীব্র রোদার আর গরমে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে দু-একদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে তাপপ্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা করছি বর্তমান টিউবওয়েলের মটরে পানি উঠছে না। বৃষ্টি হলে সমস্যা স্বাভাবিক হবে বলে আশা রাখি।
জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, শুধু ঝিনাইদহ জেলাতে না। জেলাজুড়ে কত হাজার বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে নলকূপ রয়েছে, তা আমাদের পরিসংখ্যানে নেই। তবে সরকারিভাবে ঝিনাইদহ জেলায় ১৭ হাজার গভীর ও ১৮ হাজার অগভীর নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপে পানির স্বাভাবিক অবস্থা রয়েছে। প্রকৌশলীদের পরামর্শ নিয়ে নলকূপ স্থাপন করলে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট কমবে।
ঝিনাইদহ জেলার কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মো. জাহিদ হাসান জানান, বর্তমান সময়টা শুষ্ক এবং উষ্ণকাল। এসময় নদ-নদীর পানি এমনিতেই কমে যায় । ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কিছুটা নেমে যায়। যে কারণে পানি ব্যবহারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলে এ সব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৪
এসআরএস