ঢাকা: গড় আয়ু ২০ বছর, সম্রাটের সে বয়স পেরিয়েছে দুই বছর আগে। বয়সের ভারে চলতে কষ্ট হয় তার, এখন আলাদা থাকে সম্রাট।
সম্রাটের মত এমন অন্তত দুই ডজন প্রাণী ঢাকা চিড়িয়াখানায় মৃত্যুর কাছাকাছি। আকৃষ্ট করতে পারছে না দর্শনার্থী। কর্তৃপক্ষের ‘বোঝা’ হয়ে আছে এসব প্রাণী।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, আইন না থাকায় ওই সব প্রাণিগুলোকে ইউথোনেশিয়া করা যাচ্ছে না। ইউথোনেশিয়া হলো ‘কষ্টহীন মৃত্যু’, যা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে কার্যকর রয়েছে।
ঢাকা চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এনায়েত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে অন্তত ২৩টি এমন বয়স্ক প্রাণী রয়েছে। যেগুলো না মরছে, না দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা যাচ্ছে।
![](files/October_2014/October_09/ZOO_Lion_banglanews24_1_787602621.jpg)
চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা জানান, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গড় বয়স ১৫-২০ বছর। চিড়িয়াখানায় এ জাতের সবচেয়ে বয়স্ক সম্রাটের বয়স ২২ বছর তিন মাস। আরেকটি বাঘ প্রমিলার বয়স ২০ বছর দুই মাস। রাজার বয়সও ১৬ বছর পাঁচ মাস। এক বছর কম হলেও রাণী এখন অনেকটা নিস্তেজ। একটি পা ভেঙে শীর্ণকায় শরীর তার।
![](files/October_2014/October_09/ZOO__Lion_banglanews24_906839082.jpg)
এছাড়াও ভারতীয় সিংহ আছে বেশ কয়েকটি, যেগুলোর গড় আয়ু পেরিয়েছে এক থেকে তিন বছর আগে। যে কোনো সময় এসব প্রাণীর মৃত্যু হতে পারে।
কিউরেটর জানান, বয়স্ক প্রাণীর মধ্যে বাঘ পাঁচটি, সিংহ পাঁচটি, তৃণভোজী প্রাণী চারটি ছাড়াও বানর প্রজাতির অন্তত সাতটির বয়স গড় আয়ু পেরিয়েছে।
বয়স্ক এসব প্রাণী এখন দর্শনার্থীকে আকর্ষণ করে না। সম্রাটসহ কয়েকটি বাঘ এখন আলাদা রাখা হয়েছে। টাইগার মঠে আছে সম্রাট।
![](files/October_2014/October_09/ZOO__Lion_banglanews24_2_309359526.jpg)
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, অন্যান্য দেশে চিড়িয়াখানার নিজস্ব আইন থাকায় বয়স্ক প্রাণিগুলোকে ইউথোনেশিয়া করে মেরে ফেলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে আইনটির খসড়া প্রস্তুত হলেও আটকে আছে।
![](files/October_2014/October_09/ZOO__Lion_banglanews24_3_128621243.jpg)
ঢাকা চিড়িয়াখানা আইনের খসড়া বর্তমানে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আপত্তির কারণে আটকে আছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় বিধি তৈরি করে চিড়িয়াখানা পরিচালনায় ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর জানান, নিজস্ব আইন থাকলে বয়স্ক প্রাণিগুলোর ইউথোনেশিয়া করে জীবমৃত অবস্থায় তাদের কষ্টহীন মৃত্যু কার্যকর করা যেত।
এছাড়া আইন না থাকায় বিশ্বব্যাপী চিড়িয়াখানাগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘ডব্লিউএজেডএ’র সদস্য হতে পারছে না বাংলাদেশ।
চিড়িয়াখানায় ইমু পাখির বাচ্চা জন্ম হলেও মরে যায়। যদিও এবার তিনটি বাচ্চা টিকে আছে। উট পাখির বাচ্চাও টিকে না।
![](files/October_2014/October_09/ZOO__Lion_banglanews24_5_140802193.jpg)
কিউরেটর বলেন, নিজস্ব আইন থাকলে এসব প্রাণির বংশ বৃদ্ধির চেষ্টা করা যেত। ডব্লিউএজেডএ’র সদস্য হিসেবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করে দুর্লভ অনেক প্রাণী টিকিয়ে রাখা যেত।
![](files/October_2014/October_09/ZOO__Lion_banglanews24_7_578464326.jpg)
এছাড়াও এক দেশের চিড়িয়াখানার সঙ্গে বাংলাদেশের চিড়িয়াখানার প্রাণি বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হতো।
![](files/October_2014/October_09/ZOO__Lion_banglanews246_854839152.jpg)
আইনের আওতায় ইচ্ছে হলেই যে কেউ মিনি চিড়িয়াখানা তৈরি করতে পারবে না বলেও জানান কিউরেটর।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৪