ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

জীবাণু সারে নতুন সম্ভাবনা

বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর নতুন ৩ ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার

বাকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৫
বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর নতুন ৩ ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার

বাকৃবি (ময়মনসিংহ): মসুর ডালের শিকড়ে গুটি বা নডিউল সৃষ্টিকারী নতুন তিনটি ব্যাকটেরিয়ার শনাক্তকরণ ও নামকরণ করে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (বিনা) নতুনভাবে পরিচিত করলেন বিজ্ঞানী ড. হারুন অর রশীদ। প্রায় ছয় বছর গবেষণার পর আবিষ্কৃত এ তিনটি ব্যাকটেরিয়ার নাম আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ করেছেন বিনার এ সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।



বৈজ্ঞানিক নামকরণের স্বীকৃতি প্রদানকারী আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘ইন্টারন্যশনাল জার্নাল অব সিস্টেমিক অ্যান্ড ইভল্যুশনারি মাইক্রোবায়োলজিতে Rhizobium bangladeshense (R), Rhizobium binae (R) এবং Rhizobium lentis (R) হিসেবে এ তিনটি ব্যাকটেরিয়ার নাম প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণার বিষয়ে ড. হারুন বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৩০টি ব্যাকটেরিয়া সংগ্রহের পর সেগুলোর মধ্য থেকে সাতটির জিন সিকুয়েন্স করে বায়োইনফরমেটিক এনালাইসিস, ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টসহ আরো অন্যান্য বৈশিষ্ট পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার পর দেখা যায় বাংলাদেশে যে প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় তা অন্যান্য থেকে আলাদা।

তিনি জানান, ওই ব্যাকটেরিয়াগুলো দ্বারা উৎকৃষ্ট মানের জীবাণু সার তৈরি সম্ভব হবে, যা মসুর ছাড়াও খেসারি এবং মটরশুটি ফসলে ব্যবহার করা যাবে। ফলে আগামীতে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমে আসবে এবং ওই ফসলগুলোর ফলন বাড়ানো যাবে। ইতোমধ্যে বিনা এ ধরনের জীবাণু সার উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা শুরু করেছে।

ড. হারুন বলেন, ব্যাকটেরিয়া নিয়ে প্রায় চার বছর গবেষণার পর  ‘জেনেটিক ডাইভারসিটি অব রাইজোবিয়া নডিউলেটিং লেনটিল ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে ২০১২ সালের মার্চে মাইক্রোবায়োলজির বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘সিস্টেমিক অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড মাইক্রোবায়োলজি'তে এবং ২০১৩ সালের আগস্টে অপর বিখ্যাত জার্নাল ‘এফইএমএস মাইক্রোবায়োলজি’তে প্রকাশিত হয়।

গবেষণার দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই ব্যাকটেরিয়াগুলোর ডিএনএ হাইব্রিডাইজেশন, কার্বন-নাইট্রোজেন সোর্চ ইউটিলাইজেশন প্যাটার্ন এবং জিনোম সিকুয়েন্স করা হয়। পরে ২০১৫ সালের জুনে ‘ইন্টারন্যাশনাল কোড অব নমেনকালচার অব ব্যাকটেরিয়া’র নিয়ম অনুসরণ করে ব্যাকটেরিয়া তিনটির নামকরণের স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অন সিস্টেমেটিক্স অব প্রোক্যারিওট্স’।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. হারুন বলেন, যে সব বিজ্ঞানী মৌলিক গবেষণায় অবদান রাখছে তাদের উৎসাহ দিলে গবেষণার দিক দিয়ে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। ব্যাকটেরিয়াগুলোর নামকরণের ফলে যতদিন পৃথিবীতে রাইজোবিয়াম নিয়ে গবেষণা হবে ততদিন দেশের নাম স্ব-গর্বে উচ্চারিত হবে।

তাছাড়া, এসব ব্যাকটেরিয়াগুলো থেকে ভাল জীবাণু সার তৈরি করে ইউরিয়া সারের প্রয়োগ কমাবে এবং উৎপাদন খরচ কমবে। ফলে আগামীতে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমে আসবে এবং ডাল ফসল গুলোর ফলন ১০/২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৫
এসএইচ/এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।