ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

এবার বালাই দমনে ব্যাঙ ‘চাষ’

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৬
এবার বালাই দমনে ব্যাঙ ‘চাষ’

ঢাকা: কৃষি প্রধান বাংলাদেশে ফসল উৎপাদনে প্রধান বাধা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ বা বালাই। ক্ষতিকর এ বালাই রোধে এবার ব্যাঙ চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।



সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পোকামাকড়, রোগজীবাণু, আগাছা, কৃমি, ক্ষতিকর মেরুদণ্ডি প্রাণী ইঁদুর, পাখির আক্রমণে ধানের ১৬ শতাংশ ফলন কমে যায়। যা সবজির ক্ষেত্রে প্রায় ২৫ শতাংশ।

এক্ষেত্রে বালাইনাশকের ওপর নির্ভরশীলতা যেমন ব্যয় বহুল, তেমনি তা পরিবেশ দ‍ূষণীয়ও। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে এসব দমনে ব্যাঙ চাষ একটি কার্যকর উদ্যোগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, ব্যাঙ চাষের মাধ্যমে বালাই দমনে পদ্ধতি চলমান প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এ বিষয়ে অধিদফতরের স্টিয়ারিং কমিটির সভাতেও বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রথমে অন্য কোথাও ব্যাঙের চাষ করে তা ফসলের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি তা আরও সম্প্রসারণ করা হবে।
 
সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পে ব্যাঙ চাষ নতুনভাবে যুক্ত হচ্ছে।
 
এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে দেশে ব্যাঙের সংখ্যা কমে গেছে। প্রথমে কোথাও তা চাষ করে বালাই দমনে ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে ছাড়তে হবে।

‘বাদামি ঘাস ফড়িং ফসলের অনেক ক্ষতি করে। কিন্তু জমিতে সেচ দেওয়ার ফলে এরা বেশি উড়তে না পেরে পানিতে ভেসে যায়। তখন এসব পোকা ব্যাঙ খেয়ে ফেলবে। এভাবে কীটনাশকের বিপরীতে ব্যাঙ দিয়ে বালাই দমন করা সম্ভব। ’
 
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপদ ফসল উৎপাদন, পরিবেশ ও জনস্বাস্থের কোনো ধরনের ক্ষতি না করে কৃষকের উৎপাদন এবং আয় বাড়াতে বালাই দমনের জন্য সব পদ্ধতি আমরা অবলম্বন করতে থাকবো। পরিবেশবান্ধব এ ধরনের পদ্ধতিতে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে চাই। ’
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের ২৭৫টি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু হবে। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৮ সালে। সব মিলিয়ে এ প্রকল্পের ব্যয় হবে ৫৯ কোটি টাকা।

কর্মকর্তারা বলছেন, ধান ও ফসলের ক্ষতিকর বালাই দমনের জন্য ব্যাঙ চাষের পদ্ধতি বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া রাসায়নিক বালাইনাশক মুক্ত ফসল উৎপাদনের জন্য  সবজি ফসলেও ব্যাঙ চাষের উদ্যোগের কথা ভাবা হচ্ছে।
 
একই সঙ্গে নিরাপদ সবজি চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অধিক হারে সেক্স ফেরোমেন এবং আলোক ফাঁদের প্রদর্শনীর বিষয়েও মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে ৯৭ হাজার ৫০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেবে সরকার। প্রায় চার হাজার আইপিএম ক্লাব স্থাপন করে প্রকল্প এলাকায় কীটনাশকের ব্যবহার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনা হবে।  

এতে জমিতে ধান ও সবজির উৎপাদন প্রায় ১৫ শতাংশ বাড়বে বলে মনে করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৬
এমআইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।