শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): নিজের ক্যামেরায় নতুন পাখি খুঁজে পাওয়ার আনন্দ সীমাহীন। আর তা যদি হয় দেশের প্রথম রেকর্ড করা কোনো পাখি, তবে তো এই আনন্দ-উচ্ছ্বাস বর্ণনাতীত!
সম্প্রতি পাখি পর্যবেক্ষক ও আলোকচিত্রী আবদুল মজিদ শাহ শাকিল গাংচিল পরিবারের একটি পাখির ছবি ধারণ করছেন– যা বাংলাদেশের প্রথম রেকর্ড করা একটি পরিযায়ী পাখি।
পাখিটিকে এর আগে বাংলাদেশের আর দেখা যায়নি। দেখা গেছে অতি সম্প্রতি। এর ইংরেজি নাম ব্লাক-লেগেড কিডিওয়েক। তবে বাংলা নাম এখনো দেওয়া হয়নি। পাখিটি বাংলাদেশের পাখির তালিকায় যুক্ত হওয়া নতুন একটি পাখি।
পাখি পর্যবেক্ষক ও আলোকচিত্রী আবদুল মজিদ শাহ শাকিল বাংলানিউজকে বলেন, জানুয়ারি মাসের চার তারিখে ভোলার তুলাতুলিতে এ পরিযায়ী পাখির ছবিটি তুলি। এর নাম ব্লাক-লেগেড কিডিওয়েক। বিশাল মেঘনা নদীর উপর দিয়ে পাখিটি আপন মনে উড়ে যাচ্ছিল। দুঃখের বিষয় এর একটি মাত্র ছবি তোলার সুযোগ পাই।
দেশের প্রথম রেকর্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, পাখিটির সঙ্গে আমার পরিচিত কোন গাঙচিলের মিল না পেয়ে এর আইডি চেয়ে ফেসবুকের ভারতীয় একটি পাখি-গ্রুপে পোস্ট দেই। সেখানে অনেকেই এটিকে বিরল Black-legged Kittiwake বলে মত দিতে থাকেন।
পরে আমি ছবিটি বাংলাদেশে পাখি নিয়ে গবেষণারত আন্তর্জাতিক পাখি বিশেষজ্ঞ পল থমসন এর ইমেইলে ছবিটি পাঠাই। পরবর্তীতে তিনি এ পাখিটির আইডি নিশ্চিত করেন এবং পাখিটি বাংলাদেশে প্রথম দেখা গেলো বলে উল্লেখ করেন।
পাখি গবেষক ও আলোকচিত্রী সৌরভ মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ব্লাক-লেগেড কিডিওয়েক পাখিটি বাংলাদেশে দেখা পাওয়া নতুন পরিযায়ী পাখি। এর আগে কখনো এই পাখিকে আমাদের দেশে দেখা যায়নি। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে একাধিকবারে একে দেখা গেছে। ২০০২, ২০০৫ এ ভারতের আসাম, কেরেলা, মহারাষ্ট্র প্রভৃতি স্থানে পাখিটিকে দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, এটি গাঙচিল পরিবারের পাখি। বাংলা নাম ‘কালো-পা কিডিওয়েক’ রাখা যেতে পারে।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব সূত্র জানায়, Black-legged Kittiwake মূলত উত্তর প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরের পাখি। এদের আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপ, কোরিয়া, জাপান উপকূল ও উত্তর প্রশান্ত মহাসগরীয় দ্বীপপুঞ্জগুলোতে দেখা যায়। তবে মাঝেমধ্যে এরা ভারতীয় উপমহাদেশেও কিছু দিনের জন্য আসে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
বিবিবি/এএ