শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববরেণ্য পাখি বিজ্ঞানী পিটার সাইমন পালাসের জন্মদিন। ২৪৮ বছর আগে বার্লিনে জন্মেছিলেন এই বরেণ্য ব্যক্তিত্ব।
শীত মৌসুমে বাইক্কা বিলে গেলেই বড় আকারের পরিযায়ী পাখি ‘পালাসি-কুরাঈগল’ (Pallas’s Fish Eagle) এর সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয়ে যায়। অন্য পাখিদের চেয়ে তার ভাবই আলাদা! গাম্ভীর্য ঘিরে রাখে তাকে।
উঁচু টাওয়ারে উঠে পাখি পর্যবেক্ষণ করতে থাকলে দেখা যায়- মাঝে মধ্যে টাওয়ারের দিকে উড়ে আসে সে। প্রতিমুহূর্ত খাবা অনুসন্ধানে শত ব্যস্ততা! এই ‘পালাসি-কুরাঈগল’ পাখিটির সঙ্গেই যুক্ত পাখিবিজ্ঞানী পিটার সাইমন পালাস।
এটি বড় আকারের ঈগল। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৮৪ সেমি। কালচে বাদামি দেহ। মাথা, গলা, পিঠ, সোনালি-হলুদ। ঘনকালো বাদামি ডানা ও লেজ। লেজের মাঝে স্পষ্ট সাদা ব্যান্ড। চোখ হলুদে এবং চঞ্চু কালচে মেটে। এরা চিৎকার করে ‘কুররাহ’ ‘কুররাহ’ স্বরে ডাকে।
প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ, লেখক ও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলে বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের বিপন্ন পাখি ‘পালাসি-কুরাঈগল’ আমাদের প্রতিদিন তার কথা মনে করিয়ে দেয়। তার নামে বাংলাদেশে আরও দু’টি পাখি রয়েছে। এরা হলো ‘পালাসি-গাঙচিল’ এবং ‘পালাসি-ফড়িংফুটকি’।
তিনি আরও বলেন, এ তিনটি পাখি ছাড়াও বিশ্বের আরও দশটি পাখির নাম হয়েছে পালাসের নামে। পাখি ও স্তন্যপায়ী ছাড়াও তার নামে অনেক গাছ, মাছ ও পোকামাকড়ের নাম দেওয়া হয়েছে। এ সব উদ্ভিদ ও প্রাণীর তথ্য তিনিই প্রথম লিখেছেন।
তার কর্মজীবন সম্পর্কে ইনাম আল হক বলেন, অজানা উদ্ভিদ ও প্রাণীর টানে সাইবেরিয়া-প্রান্তর, ককেশাস-পর্বত, কৃষ্ণ-সাগর ও ক্রাইমিয়া-বনভূমির মতো দুর্গম এলাকায় একাধিক অভিযান করে তিনি বই লেখেন। তাই একটি পর্বত, আগ্নেয়গিরি, উল্কাপিণ্ড ও ব-দ্বীপেরও নাম পালাসের নামেই রাখা হয়েছে। তার বই Flora Rossica আজও রুশ উদ্ভিদবিদের কাছে মহামূল্যবান গ্রন্থ।
পালাসের শেষ জীবন প্রসঙ্গে ইনাম আল হক বলেন, দীর্ঘ সৃজনশীল জীবন রাশিয়ায় কাটালেও ৭০ বছর বয়সে পালাস দেশে ফিরে যান। অবিশ্বাস্য হলেও ভিনদেশি (এবং জার্মান!) এই বিজ্ঞানীর নামে রাশিয়ার ভলভগ্রাদ অঞ্চলে একটি জেলার নাম দেয়া হয়েছে ‘পালাসোভকা’।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৬
বিবিবি/এএ