শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): গাছভর্তি ফুলেরা যেন হাসছে! তাদের সবুজপাতার অগ্রভাগ দেখার উপায় নেই। এত্তো এত্তো ফুল! ফুলগুলো যেন প্রতিযোগিতামুখর হয়ে পাতাদের পেছনে ফেলে সামনে এসে পড়েছে।
গাছভরা এমন ফুল দেখে কোনো কোনো পথচারীর চোখ জুড়ায়। ভরে উঠে মনও। দূর থেকে দেখা যায় এমন গাছভর্তি ফুলের মেলা।
গাছের মাঝে থোকায় থোকায় এমন ফুল দেখে মন ভালো হয়ে যায়। যাত্রাবিরতি টেনে কিছুক্ষণ এমন ফুলেদের দিকে না তাকিয়ে থাকার কোনো উপায় নেই পথিকের। কাছে এসে দাঁড়ালেই সবুজ-সাদা গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলের ভেতর থেকে তীব্রঘ্রাণ।
এই ফুলের সংস্কৃত নাম সপ্তপর্ণী। স্থানীয় নাম ছাতিয়ান, ছাইত্তান, ছাতনি প্রভৃতি। বৈজ্ঞানিক নাম Alstonia scholaris। এদের জন্মস্থান ভারত, চীন ও মালয়েশিয়া। শরৎ ও হেমন্তকাল ফুল ফোটার সময়।
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের সিংহবীজ এলাকার এই ফুলগুলোর ছবি তোলা হয়। ওই এলাকার কালিচরণ নাথ নামের জনৈক বৃদ্ধা বাংলানিউজকে জানান, তাদের এলাকায় এই ফুলকে ‘ছাতনি ফুল’ বলে।
ছাতিমের আকার ও গড়নের বৈশিষ্ট্য বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। সরল উন্নত কাণ্ড কিছু দূর উপরে হঠাৎ শাখা-প্রশাখার একটি ঢাকনা সৃষ্টি করে আবার একলাফে একে ছাড়িয়ে অনেক দূর উঠে যায় এবং এমনি পত্রঘন কয়েকটি চন্দ্রাতাপের স্তর সৃষ্টি করে। এসব কারণে অনেক দূর থেকে ছাতিম গাছ শনাক্ত করা যায় বলে জানান প্রকৃতি গবেষক মোকারম হোসেন।
তিনি আরো বলেন, উৎকৃষ্ট জ্বালানি, আসবাবপত্রে ব্যবহার এবং সর্বোপরি বাক্স-প্যাকিং ও দেশলাইয়ের কাঠিতে ব্যবহৃত হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে এই ছাতিম গাছগুলো কাটা পড়ছে। ফুল ফুটে থাকলে গাছগুলোর চারদিক তীব্র গন্ধে মুখরিত হয়ে যায়।
গাছটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গাছটির উচ্চতা পনের-বিশ মিটার। এ চির সবুজ গাছটি দুধকষে ভরা। মসৃণ পাতার দৈর্ঘ্য প্রায় আঠারো সে.মি। পাতার উপর উজ্জ্বল সবুজ, নিচ সাদাটে।
Apocynaceae পরিবারের এই গাছের ছাল ও আঠা জ্বর, হৃদরোগ, হাপানি, আমাশয় প্রভৃতি রোগে বিশেষভাবে কার্যকর। ভেষজশাস্ত্রে এই বৃক্ষের কদর রয়েছে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
বিবিবি/এএটি/আরআই