ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

সমুদ্রে সমুদ্রে মরছে প্রবাল প্রাচীর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
সমুদ্রে সমুদ্রে মরছে প্রবাল প্রাচীর সমুদ্রে সমুদ্রে মরছে প্রবাল প্রাচীর (ছবি সংগৃহীত)

মানবগোষ্ঠী যদি এখনই গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃস্বরণ বন্ধ না করে তাহলে সমুদ্র তলে প্রবালগুলো বর্ণ হারাবে আর ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাবে। ধীরে ধীরে বিশ্বের সব প্রবাল প্রাচীর ধ্বংসের মুখে পড়বে।

জাতিসংঘের একটি গবেষণা এ তথ্য দিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার অনন্য সাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃহদাকায় প্রবাল প্রাচীরের দিকে তাকালে দেখা যাবে এরই মধ্যে এসব প্রবালে বিবর্ণ ভাব প্রকট।

গেলো মাসে ন্যাচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে নতুন গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। তাতে আশঙ্কা করা হযেছে, চলতি শতকের মধ্যে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ প্রবাল প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ২০৪৩ সালের মধ্যেই প্রবাল প্রাচীরগুলোর ক্ষয়িষ্ণুভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করবে।
সমুদ্রে সমুদ্রে মরছে প্রবাল প্রাচীর (ছবি সংগৃহীত)আর সবচেয়ে আশঙ্কার দিকটি হচ্ছে, গেলো বছর প্যারিস জলবায়ূ চুক্তির অংশ হিসেবে যেসব দেশ কার্বন নিঃস্বরণ কমাবে বলে অঙ্গীকার করেছে তারা এই প্রবাল প্রাচীরগুলো রক্ষায় খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারবে না।

প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এমনকি দেশগুলো তাদের দেওয়া অঙ্গীকার যদি মেনেও চলে প্রবাল প্রাচীর গুলোর ৭৫ ভাগই ২০৭০ সালের আগেই ক্ষয়ে যেতে শুরু করবে।  
         
ক্ষয়িষ্ণু প্রবালগুলোর গা থেকে প্রথমে শ্যাওলা সরে যায় আর ধীরে ধীরে তা শ্বেতরূপ নিতে থাকে। সমুদ্রে তাপমাত্রার প্রভাবে সৃষ্ট উষ্ণতার কারণেই এমনটা ঘটে। এখনই যদি এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা না যায় প্রবালগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাবে।
অস্ট্রেলিয়ার দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ গেলো বছর ব্যপক মড়কের মুখে পড়েছে। এখানকার ৯৩ শতাংশ প্রবালই তার রঙ হারিয়েছে, আর ২২ শতাংশ প্রবালের মৃত্যু ঘটেছে।

প্রবালের শৈল শ্রেণিকে সমুদ্রতলের বৃষ্টি অরণ্যের সঙ্গেই  তুলনা করা হয়। পৃথিবী নামের এই গ্রহের ২৫ শতাংশ জলজ প্রজাতির আবাস এই সব প্রবালরাজির মাঝে। আর এই প্রবাল থেকে বছরে যেসব পণ্য কিংবা সেবা মেলে তার মূল্যমান ৩৭৫ বিলিয়ন ডলার।
তবে এই ব্যাপক ক্ষয়ের কারণে প্রবালের শৈল শ্রেণির ইকো সিস্টেমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে।

গবেষণাপত্রের প্রধান রচয়িতা ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যাটমোসফেয়ার অ্যাডমিন্সট্রেশন এর সহকারী বিজ্ঞানী রুবেন ভ্যান হুইদঙ্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ক্ষয় এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে আর সামনে আরও যে ক্ষতি হবে তাতে সমুদ্র তলের প্রবাল থেকে যে অর্থনীতির চাকা ঘোরে তা স্তিমিত হয়ে আসবে। মৎস্য উৎপাদনের বৃহৎ আবাসন আর থাকবে না।

জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচি ইউএনইপি’র প্রধান এরিক সোলেইমকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সমুদ্র সম্পদের খাজাঞ্জিখানা এসব প্রবাল প্রাচীর, যাকে জলবায়ূ পরিবর্তনের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, এখনো সময় আছে আমাদের সমুদ্রের উষ্ণতা কমিয়ে আনার। অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই আমাদের তা করতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।