কিন্তু সোমবার রাত দশটায় পতেঙ্গার লালদিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র। তিনতলা বিদ্যালয় ভবনটির সব কটি কক্ষেই তালা।
কিন্তু অনেক সময় ধরে দরজা খুলে না দেওয়ায় ও কর্তৃপক্ষের কাউকে না দেখায় তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাদেরই একজন আব্দুল করিম। তিনি পরিবারের চার সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্রে ভরা বস্তা নিয়ে অপেক্ষা করছেন বিদ্যালয়ের বারান্দায়। সেখানে আগে থেকে কিছু ছাগল বেঁধে রাখায় ভালোমতো দাঁড়ানো যাচ্ছে না।
আব্দুল করিম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের সঙ্গে এটা কেমন মশকারি। দিনভর আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসার জন্য মাইকিং করা হলো। এখনো করা হচ্ছে। অথচ এসে দেখছি তালাবন্দি সব কক্ষ। সিঁড়িতেও তালা মেরে রাখা হয়েছে, তাই উপরেও উঠার সুযোগ নেই। এখন এতো রাতে যাবো কোথায়?'
শুধু আব্দুল করিম নন, সেখানে আশ্রয় নিতে আসা সবাই এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। অনেকেই এসে ফিরেও যাচ্ছেন। অনেকে আবার বহু দূরের খুলে দেওয়া আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন। অথচ অদূরের সড়ক দিয়ে তখনো মাইকিং করা হচ্ছে, ' আপনারা নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে দ্রুত চলে আসুন'!
এদিকে এই আশ্রয়কেন্দ্রটি বন্ধ থাকলেও সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত মেরিন ফিশারিজ সার্ভিল্যান্স চেক পোস্ট কর্তৃপক্ষ মানবিকতার খাতিরে তাদের তিনটি ভবনের মধ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জায়গা করে দিয়েছেন। সেখানে কয়েকশ’ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
চেকপোস্টের পরিদর্শক মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, 'আমাদেরটা আশ্রয়কেন্দ্র নয়। সম্পূর্ণ মানবিকতার খাতিরে আমাদের এখানে মানুষজনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আমাদের তিনটি ভবনে চেয়ার-টেবিল সরিয়ে তাদের জন্য জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। '
এছাড়া পতেঙ্গার ১৪ নম্বর ঘাট এলাকায় অবস্থিত বন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি ভবনেও অর্ধ শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তবে স্থানীয়রা বলছেন, উপকূলে বহু মানুষ রয়েছেন। এই তুলনায় এখানে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
রাত যতো বাড়বে মানুষ ততো আসা শুরু করবে। কিন্তু লালদিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রটি কেনো নির্দেশের পরেও খুলে দেয়নি তা বিস্ময়ের।
এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছালেহ আহম্মদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়ঃ ০০১৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
টিএইচ/টিসি/জেডএম