ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

থাই ‘মোরা’র পর এবার বাংলাদেশি ‘অক্ষি’

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
থাই ‘মোরা’র পর এবার বাংলাদেশি ‘অক্ষি’ মোরা’র বিদায়ের পর এবার আসছে ‘অক্ষি’

ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম। যার অর্থ ‘সাগরের তারা’। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার (৩০ মে) ভোরে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হেনে এরইমধ্যে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন এর গতিপথে থাকা মানুষজন।

সম্ভাব্য তাণ্ডব চালিয়ে ঘূর্ণিঝড়গুলো বিদায় নিলেও এর ভয়াবহতা থেকে বাদ যান না উপকূলবাসী। বরং ঘুরে দাঁড়িয়ে পরবর্তী ঝড় থেকে বাঁচার জন্য তাদের প্রস্তুত হতে হয়।

এদিকে মোরা’র বিদায়ের পর এবার আসছে ‘অক্ষি’। যার অর্থ চোখ। ভারত, আরব বা বঙ্গোপসাগরের যেখানেই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে তার নাম ‘অক্ষি’ ব্যবহার করা হবে। যেমন- ‘মোরা’ শব্দটি থাইল্যান্ডের দেওয়া অথচ উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগরে। চপলা আরব সাগরে উৎপন্ন হলেও নামটি বাংলাদেশের দেওয়া। ঝড় যেখানেই উৎপন্ন হোক না কেন পূর্বনির্ধারিত নামগুলো পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা হবে।

এরইমধ্যে নাদা (ওমান), ভারদাহ (পাকিস্তান), মারুথা (শ্রীলঙ্কা), মোরা (থাইল্যান্ড) আঘাত হেনেছে। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম হলো- অক্ষি (বাংলাদেশ), সাগার (ভারত), মেকুনু (মালদ্বীপ), দেইয়া (মায়ানমার), লুবান (ওমান), টিটলি (পাকিস্তান), গাজা (শ্রীলঙ্কা), পিহেটাই (থাইল্যান্ড), ফণি (বাংলাদেশ), ভাইয়ু (ভারত), হিক্কা (মালদ্বীপ), কাইয়ার (মালদ্বীপ), মাহা (ওমান), বুলবুল (পাকিস্তান), পাওয়ান (শ্রীলঙ্কা) ও আমপান (থাইল্যান্ড)।

বিশ্ব আবহাওয়া বিজ্ঞান সংগঠন (ডাব্লিউএমও) এবং ইউএন ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক (ইএসসিএপি) প্যানেল ঝড়ের নামগুলো ঠিক করে। প্যানেল নির্ধারিত ৬৪টি ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তীটির নাম ‘অক্ষি’।

এ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদফতরের উপ-পরিচালক আয়েশা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের নামগুলো আগে থেকেই রাখা হয়েছে। সিরিয়াল অনুসারে এগুলো ব্যবহার করা হয়। মোরা’র পরেই ব্যবহার করা হবে বাংলাদেশের দেওয়া প্রস্তাবিত নাম ‘অক্ষি’।

ইএসসিএপি প্যানেল বোর্ডের সদস্যরা প্রতি বছর সভার মাধ্যমে ঝড়ের নাম নির্ধারণ করে। প্যানেলের ৮ সদস্য হলো- বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড। তবে প্যানেলে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে ইয়েমেন। প্রতিটি দেশ ৮টি করে নাম প্রস্তাব করে। ক্রমানুসারে নামগুলো ব্যবহার করা হয়।
 
বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ৮টি নাম হলো- অনিল, অগ্নি, নিশি, গিরি, হেলেন, চপলা, অক্ষি ও ফণি। দুই বছর আগে ‘চপলা’ নামটি ব্যবহার করা হয়।
 
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দফতর ১৯৫৩ সালে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে। তাদের দেওয়া প্রথম নামটি ছিল ‘অ্যালিস’। ঝড়ের আচরণ নারীর মতোই অনিশ্চিত- এমন একটি প্রচলিত ধারণা থেকে সে সময় প্রায় সব ঝড়ের নামই হতো মেয়েদের নামে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্স উপকূলে ২০০৫ সালে যে ঝড়টি ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল তার নাম ‘ক্যাটরিনা’। কিন্তু লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ ওঠায় ১৯৭০ সাল থেকে নামকরণের বর্তমান রীতি চালু করা হয়। ১৯৭৯ সালের ‘বব’ হলো প্রথম ঘূর্ণিঝড়, যা পুরুষদের নাম পায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৬
এমআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।