ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

খুলনায় গরমে ঘর থেকে বের হওয়া দায়!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
খুলনায় গরমে ঘর থেকে বের হওয়া দায়! তীব্র দাবদাহে প্রাণীকুল অতিষ্ঠ। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: গরমের তীব্রতা যেন আর কাটছেই না। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। নেই বাতাস, নেই বৃষ্টি, ঘরের বৈদ্যুতিক পাখার বাতাস যেন লু-হাওয়া। সকাল ১০টার পর বাইরের অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ঘরের বাইরে বেরুলেই সূর্যের প্রখর তাপে ঘেমে নেয়ে একাকার।

তীব্র খরতাপের কারণে হতদরিদ্র দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের আয়-রোজগার ব্যাপকহারে কমে গেছে। দিনমান বাড়ছে কষ্ট-দুর্ভোগ।

গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শ্রমজীবী মানুষ ও শিশুরা। সূর্য দহনে প্রাণীকূলও শীতল পরশের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠছে।

আগুনঝরা আবহাওয়ায় সাধারণ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। বৃষ্টির জন্য মানুষের মধ্যে যেনো হাহাকার পড়ে গেছে। কিন্তু সেই কাঙ্খিত বৃষ্টি মিলছে না। কয়েকদিন ধরে আকাশে কোথাও কোথাও মেঘের দেখা মিললেও হচ্ছে না তেমন বৃষ্টি।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুর হতে না হতেই খুলনা মহানগরীর তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গড়ায়। প্রকৃতি যেন ছাড়ছে তপ্ত নিঃশ্বাস। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তির ছিটেফোঁটাও নেই। সূর্য দহনে পুড়ছে গোটা শহর। কাঠফাটা রোদে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে । তীব্র দাবদাহে প্রাণীকুল অতিষ্ঠ।  ছবি: বাংলানিউজদুপুরে মহানগরীর পথ-ঘাট খাঁ খাঁ করছে। ওষ্ঠাগত গরমে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও হাঁসফাঁস করছে।

প্রচণ্ড গরমে সবার ত্রাহি অবস্থা। শহর-বন্দর কিংবা গ্রাম কোথাও স্বস্তি নেই। টানা কয়েকদিনের দাবদাহে জনজীবনে নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। অস্বস্তিকর গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবনযাত্রা।

শান্তিধাম এলাকার আব্দুল্লাহ নামে এক রিকশাচালক বলেন, প্রচণ্ড গরমে রিকশা চালাতি পারছি না। হাঁপায়ে উঠছি। পেট আছে বইলে বের অই। সূর্যডা যেন গলে গলে শরীরে পড়ছে। দেহেন কেমন ঘামাইয়ে গেছি।

খুলনা শিপইয়ার্ডের ইলেকট্রিশিয়ান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রচণ্ড গরমে কাজ-কর্ম করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমে রাতে ঠিকমতো ঘুমানোও যাচ্ছে না।

তার মতো বেশ কয়েকজন শ্রমিকও বলেন, অনেকক্ষণ রোদে বা গরমে কাজ করতে বিশেষ করে মাঠে বা কারখানায় ও রাস্তায় ঘাটে কাজ করা যাচ্ছে না। সূর্যের তাপে চামড়া পুরে যাচ্ছে।

তারা বলেন, কয়েকদিন বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচণ্ড খরতাপে ঘর থেকে বের হতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমিক দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া সব শ্রেণির মানুষ। সামান্য স্বস্তির ও একটু শীতল পরিবেশের জন্য কাজের ফাঁকে তারা ছুটছে গাছের ছায়াতলে। তীব্র দাবদাহে প্রাণীকুল অতিষ্ঠ।  ছবি: বাংলানিউজসিঙ্গারের খান জাহান আলী সড়কের শো রুমের শাখা ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন বলেন, এ বছর গ্রীষ্মের শেষ সময়েও প্রচণ্ড তাপদাহ। এর কারণে তীব্র গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে চাহিদা বেড়েছে ফ্যান, এয়ার কন্ডিশনার (এসি) ও ফ্রিজের। তবে এসির যে পরিমাণ চাহিদা তা আমরা দিতে পারছি না। বিশেষ করে দেড় টন এসির চাহিদা বেশি।

খুলনা শিশু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আল আমিন রাকিব বাংলানিউজকে বলেন, তীব্র গরমে কাবু হচ্ছে শিশুরা। ডায়রিয়া, ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় কর্তব্যরতদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ও তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় গরম বেশি লাগছে। শুক্রবার আষাঢ়ের প্রথম দিন হলেও কাঙ্খিত বৃষ্টি আসতে সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করতে হবে। তবে দু’একদিনের মধ্যে কম-বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলমান এ তাপদাহ ১৫ জুন পর্যন্ত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।