রাজশাহী: ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী। ভোরে সূর্যোদয় হয়েছে ঠিকই।
সূর্য মামারও সাধ্য হয়নি ঘন কুয়াশার সেই বৃত্ত ছেদ করার। তাই সবুজ বৃক্ষরাজিও যেন আজ ধোঁয়াচ্ছন্নরূপ ধারণ করেছে। শহরের পিচঢালা সড়কগুলোও আজ ভিজেছে শেষ অগ্রহায়ণের ঘন শুভ্র সফেদ শিশিরবিন্দুতে।
দৃষ্টিসীমা ৫০ গজের মধ্যে নেমে এসেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমেছে ট্রেনের। ফলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আন্তঃনগরসসহ বিভিন্ন রুটের ট্রেন বর্তমানে বিলম্বে চলছে। বিলম্বিত সময়ের কারণে মানুষের নিরাপদ বাহন ট্রেনের আরামদায়ক ভ্রমণের স্বাদ এরই মধ্যে তিক্ত হয়ে উঠেছে।
ঘন কুয়াশার কারণে ক'দিন থেকে রাজশাহী-ঢাকা, ঢাকা-রাজশাহী, খুলনা-রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর আর টাইম-টেবল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে এমন আবহাওয়ায় রাজশাহী-ঢাকা ও ঢাকা-রাজশাহী রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সিডিউল নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
এদিকে, দুর্ঘটনা এড়াতে ভোর থেকে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। বেলা যতই বাড়ছে কুয়াশাও যেন আড়মোড়া দিয়ে প্রকৃতির সব কিছুকে কোলের মধ্যে টেনে নিচ্ছে। আবারি বেড়েছে ঘন কুয়াশার দাপট।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ সোমবার রাজশাহীতে সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৩৭ মিনিটে। তবে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। বেলা যতই বাড়ছে কুয়াশারও ঘনত্বও যেন তত গভীর হচ্ছে। এর ওপর বেড়েছে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। রাজশাহী শহরের পথে-ঘাটে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতে কষ্ট পাচ্ছেন। যদিও এই কুয়াশা কেটে গেলে শীতের তীব্রতা দ্বিগুণ বাড়বে বলে জানিয়েছে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজিব খান বাংলানিউজকে বলেন, মূলত কুয়াশা কেটে গেলে শীত বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না তিনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত রোববার (৬ ডিসেম্বর) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ সোমবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অর্থাৎ কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়লেও রাজশাহীতে গতকালকের তুলনায় আজকে তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে পৌষের শুরুতে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক অংকে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে রাজশাহীসহ দেশের উত্তরের বিভিন্ন জেলায় ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর পর পরই পুরোদমে শীত নামবে রাজশহীতে।
তবে এমন ঘন কুয়াশা পড়লে কৃষিতে ক্ষতির আশংকা করছেন এ অঞ্চলের কৃষক।
বরাবরই শীতে বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে কোল্ড ইনজুরি ও পচনসহ মড়ক বেড়ে যায়। তবে পরস্থিতি মোবাবেলায় এখন যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক।
ঘন কুয়াশায় আবাদ রক্ষায় করণীয় নিয়ে মাসজুড়ে তারা রাজশাহীর কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন এ কৃষি কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
এসএস/ওএইচ/