বগুড়া: বগুড়ায় তাপমাত্রা কমায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা। কুয়াশায় মোড়ানো থাকছে দিনের শুরুটা।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে ছিন্নমূল মানুষগুলো শীত নিবারণের জন্য আগুন পোহাচ্ছে। ছিন্নমূল এসব মানুষের পরনে তেমন শীতের গরম কাপড় নেই। আবার কেউ কেউ গরম কাপড়ের ওপর গায়ে জড়িয়ে নিয়েছেন চাদর বা পাতলা কম্বল। অপরদিকে মধ্য ও উচ্চ বিত্ত পরিবারের লোকজন শীতের পোশাক পরেও শীতের কামড় সামলে উঠতে পারছিলেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ছিন্নমূল মানুষগুলো জীবিকার সন্ধানে বগুড়া শহর এলাকায় বসতি গড়ে তুলেছেন অনেক আগ থেকেই। এরা শহরের রেলওয়ে স্টেশন, হাড্ডিপট্টি, রেললাইন, বাদুরতলা, চেলোপাড়া, নারুলী এলাকায় ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস করছেন। এদের মধ্যে শিশু, কিশোর-কিশোরীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের ভাঙ্গাড়ি, পলিথিন, কাগড় কুড়িয়ে বেড়ায়। এছাড়া অনেকেই রিকশা চালান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় শ্রমিকের কাজ করেন এবং নারীরা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। বয়স্ক নারী ও পুরুষ অন্যের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
হাড্ডিপট্রি এলাকার খালেক, হায়দার মিয়া, ইমরানসহ কয়েকজন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। কোনো মতে জীবনযাপন করছি। শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে ঘুরে বেরিয়ে প্লাস্টিকের বোতল, কাগজ কুড়িয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, শীতের কাপড় কেনার টাকা কোথায় পাবো তাই শরীর গরম রাখতে সন্ধ্যার পর আগুন তাপাই।
রিকশা চালক ইদ্রিস আলী বাংলানিউজকে বলেন, দিনে রিকশা চালাই। রাতে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করি। ডিউটি শেষে বাসায় ঘুমিয়ে দুপুরের পর রিকশা নিয়ে বের হই।
তিনি বলেন, শীতে কষ্ট হলেও পরিশ্রম করতেই হয়। পরিবার পরিজনদের দিকে তাকিয়ে শীত উপেক্ষা করেই রিকশা চালাই।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, রোববার বগুড়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সাত দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ জেলায় শীত মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর বগুড়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আট দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
তিনি বলেন, ভোর থেকেই জেলাজুড়ে ঘন কুয়াশা ছিল। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে বগুড়াতে। এমন আবহাওয়া আরও কয়েকদিন থাকতে পারে বলেও জানান সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২১
কেইউএ/আরআইএস