ঢাকা: ঢাকা শহর সহনীয় মাত্রার চেয়ে তিনগুণ তীব্রতার শব্দদূষণে আক্রান্ত। ফলে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত অসচেতনতাবশত অকারণেই ঘরে এবং ঘরের বাইরে শব্দদূষণ করা হচ্ছে। আবাসিক এলাকায় যানবাহনে অযাচিত হর্ন ব্যবহার, নির্মাণকাজে সৃষ্ট শব্দ, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মাইক/সাউন্ডবক্সের মাধ্যমে সৃষ্ট শব্দে প্রতিনিয়ত শব্দদূষণ হচ্ছে, যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস-২০২১ উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্প’ আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল কর্মশালায় সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী একথা বলেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত মহাপরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর প্রাণ গোপাল দত্ত এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর (যুগ্ম সচিব)।
এছাড়াও কর্মশালায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, পুলিশ বিভাগ, পরিবহন সেক্টর, সিটি করপোরেশন, বেসরকারি সংস্থা, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, উচ্চ শব্দ কম সময়ের জন্য হলেও তা শ্রবণশক্তির জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মানুষ (১২-৩৫ বছর বয়সী) অত্যধিক শব্দযুক্ত বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস হওয়ার ঝুঁকিতে রযেছে। মানসম্মত জীবনযাপনের লক্ষ্যে শব্দদূষণের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করতে সবাইকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, শব্দদূষণ থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের প্রত্যেককে শব্দসচেতন হতে হবে। অপ্রয়োজনীয় শব্দ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুদের শৈশব থেকেই শব্দসচেতন করে গড়ে তুলতে হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সরকার শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সচিবালয়ের চারপাশে নীরব এলাকা বাস্তবায়ন করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন করা হবে।
তিনি জানান, বর্তমানে আগারগাঁও এলাকাসহ সব (৯টি) সিটি করপোরেশনে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে যেখানে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সব নীরব এলাকা শব্দমুক্ত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২১
এমআইএইচ/এএ