কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে গত তিনদিন ধরে সাগর উত্তাল থাকায় ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের একমাত্র জেটি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ধসে পড়েছে জরাজীর্ণ জেটির বিভিন্ন অংশ।
শুধু জেটি নয়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকফুট উচ্চতায় উপকূলে আছড়ে পড়ায় দ্বীপের দুটি আবাসিক হোটেল, পুলিশের গেস্ট হাউসসহ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙনের মুখে পড়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাবিব খাঁন বাংলানিউজকে জানান, সংস্কারের অভাবে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে জেটির অবস্থা জরাজীর্ণ। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গত কয়েকদিন ধরে সাগর থেকে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়েছে জেটির ওপর। যে কারণে জেটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি জানান, শুধু তাই নয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দ্বীপের কোনারপাড়া, গলাচিপা, উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়াসহ অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে পুলিশের গেস্ট হাউসসহ প্রিন্স হেভেন ও প্রাসাদ প্যারাডাইস নামের দুটি আবাসিক হোটেল।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্বীপের ছয় হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা দুটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ২৩টি বহুতল আবাসিক হোটেল প্রস্তত রেখেছিলাম। আল্লাহর রহমতে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানেনি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দ্বীপের একমাত্র জেটি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া দ্বীপের চারপাশে ভাঙন রোধে জরুরিভাবে ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই এই দ্বীপ সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, এ জেটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারের ঢেউয়ের কারণে ধসে পড়ছে। জেটি বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে জানান, সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্বীপের উন্নয়নে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশের মানচিত্রের সর্বদক্ষিণের উপজেলা টেকনাফের একটি ইউনিয়ন সেন্টমার্টিন দ্বীপ। টেকনাফ থেকে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে দ্বীপটির অবস্থান। ‘নারিকেল জিনজিরা’ নামে পরিচিত সেন্টমার্টিন দ্বীপের আয়তন প্রায় ৮ বর্গ কিলোমিটার ও উত্তর-দক্ষিণে লম্বা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২১
এসবি/এইচএডি