ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে, লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি 

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২১
তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে, লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি  ফাইল ছবি

লালমনিরহাট: উজানের পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ১৮ ঘণ্টা পর তা নিচে নেমে এসেছে। ফলে লালমনিরহাটে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

 

শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দিনগত রাত ১২টার দিকে একই পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।  

জানা গেছে, ভারতের সিকিম উপত্যকা থেকে সৃষ্ট তিস্তা নদী ভারতে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। উজানে ভারতের অংশে ভারত সরকার বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা নদীর এক তরফাভাবে ব্যবহার করছে। ফলে শুস্ক মৌসুমে বাংলাদেশ অংশে কোনো পানি থাকে না। মরুভূমিতে পরিণত হয় তিস্তা। আবার বর্ষাকালে অতিবর্ষণের ফলে ভারতের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যা আর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলাসহ নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা।  

গত ০৮ জুলাই সন্ধ্যা থেকে ভারত সরকার অতিমাত্রায় পানি ছেড়ে দেওয়ায় তিস্তা নদীতে বাংলাদেশ অংশে পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। এতে দু’কুল উপচে বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। করোনাকালীন লকডাউনের এ সময়ের বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষজন।  

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টের বন্যা পূর্বাভাষ কেন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৩৫-৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল। ৮ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ পানি প্রবাহ বেড়ে যায় তিস্তায়। দিনগত রাত ১২টার দিকে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে। ব্যারাজ রক্ষার্থে সব জলকপাট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফলে ব্যারাজের ভাটিতে নদী তীরবর্তী বেশ কিছু গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়ে।  

উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যা মাত্র ১৫-২০ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে। ৯ জলাই সকাল থেকে কমতে শুরু করে তিস্তার পানি প্রবাহ। যা বিকেল ৩টার দিকে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি ঘটে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর ঘর বাড়ি থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করেছে।  

তিস্তা ব্যারাজের পানি বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস আলী বাংলানিউজকে বলেন, ভারত থেকে প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসায় বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রাহিত হয়েছিল। তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফলে নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। তবে পানি বৃদ্ধির ১৫ ঘণ্টা পরেই তিস্তার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নিচে নেমে আসে। নদীপাড়ের বন্যা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছে।

** তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩০ সে.মি. ওপরে

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।