কুড়িগ্রাম: উজানে বৃষ্টিপাত ও ঢলের কারণে পানি বাড়তে শুরু করায় কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহর লাগোয়া সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধরলা অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার রোপা আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত।
রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে কুড়িগ্রামে ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধি স্থিতিশীল রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুড়িগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও গত ২৪ ঘণ্টায় তা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। কুড়িগ্রামে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধরলা নদী অববাহিকায় বিপৎসীমার ওপরে পানি ওঠায় নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করায় ফসলি জমিসহ বসতবাড়ীর চারিদিকে পানি ওঠায় দুশ্চিন্তায় পরেছেন বোরো চাষিরা। বন্যার পানি ঢুকয় নিম্নাঞ্চলে লাগানো বোরো ধান, পাট ও বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। এছাড়াও গ্রামীণ কাঁচা সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে চরাঞ্চলবাসীদের।
অপরদিকে নদ-নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হওয়ায় কবলিত এলাকাগুলোতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পাউবো।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা অববাহিকার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক রহমত আলী বাংলানিউজকে জানান, রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করে দুপুর থেকে আবার স্থিতিশীল রয়েছে। ভাবছিলাম এবার বন্যা হবে না, হটাৎ করে পানি যেভাবে বেড়েছে বোরো আবাদ মনে হয় বন্যায় খেয়ে যাবে। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের বাসিন্দা আফসার আলী বাংলানিউজকে জানান, ভরা বর্ষা মৌসুমে বন্যা না হওয়ায় জমিতে আমন লাগিয়েছি, সেই আমন পানির নীচে। শেষ সময়ে এসে হঠাৎ করে ধরলার পানি বাড়লো। দুই একদিনের মধ্যে পানি নেমে না গেলে আমন চারা নষ্ট হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও রোববার দুপুর থেকে স্থিতিশীল রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তায় পানি হ্রাস পেতে শুরু করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধরলার পানিও কমতে শুরু করবে। পানি বাড়া-কমার সঙ্গে ঝুকিপুর্ণ এলাকাগুলোতে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। উজানে বৃষ্টি না হলে সবকটি নদ-নদীর পানি কমবে। তাই এ দফায় বড় বন্যার আশঙ্কা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২১
এফইএস/কেএআর