ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ফুলবাড়ীয়ায় নদীতে ভাসছে রাইস মিলের বিষাক্ত ছাই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১
ফুলবাড়ীয়ায় নদীতে ভাসছে রাইস মিলের বিষাক্ত ছাই ছবি: বাংলানিউজ

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ক্ষীর নদীতে পড়ছে অটো রাইস মিলের বিষাক্ত ছাই। এতে একদিকে যেমন নদী দূষণ হচ্ছে, তেমনি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে ওই এলাকার লোকজন।

জানা গেছে, পুলিশের নিষেধ সত্ত্বেও গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন রাতে উপজেলার বাকতা ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের নদীর পাড়ে সরকার অটো রাইস মিলের ছাই ফেলা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেশরগঞ্জ-পাটিরা সড়কের পলাশীহাটা বন্দরপাড়া গ্রামের ক্ষীর নদীর তীরে মিলের ছাইয়ের স্তুপ। টনকে টন ছাই নদীতে পড়ে ভেসে যাচ্ছে ভাটির দিকে।

এলাকাবাসী জানায়, গভীর রাতে কয়েকটি লরিতে এসব ছাই নদী পাড়ে ফেলা হয়। অন্যদিকে সড়ক দিয়ে ছাই পরিবহন করায় তা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। এতে ওই সড়কে চলাচলকারীরা ভুগছেন চোখের সমস্যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, সেলিম ও বাবুল সরকার নামে দুই ব্যক্তি মিলের ছাই নদী পাড়ে ফেলছে। ওই ছাইয়ের কারণে বাড়িতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ছাইয়ের টিবিতে আগুন থাকায় শিশুদের কথা চিন্তা করে আতঙ্ক বিরাজ করছে কয়েকটি পরিবারের মধ্যে।

রূপা নামে এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে থানা থেকে পুলিশ এসে নদী পাড়ে ছাই ফেলতে নিষেধ করে। এরপর কিছু সময় বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে ছয়-সাতটি লরিতে সারারাত ছাই ফেলা হয়েছে। বর্তমানে নদী তীরের আক্তার মণ্ডল ও গোপালের জমিতে ছাইয়ের স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

রেজিয়া খাতুন নামে অপর এক নারী বলেন, পুলিশ এসে নিষেধ করার পরও ছাই ফেলা বন্ধ হয়নি। আমরা গরীব মানুষ, আমাদের কথায় কি ছাই ফেলা বন্ধ হবে? আমরা নদীতে গোসল করতাম। ছাই ভাসার কারণে এখন কেউ নদীতে গোসল করতে পারে না।

এ প্রসঙ্গে মিল মালিক আবুল কালাম সরকার বাংলানিউজকে বলেন, ছাইগুলো সরানোর জন্য লোক নিয়োগ করা হয়েছে। তারা ছাইগুলো কোথায় ফেলছে আমার জানা নেই।

ফুলবাড়ীয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি ছাই ফেলতে নিষেধ করেছি।

তবে নিষেধের পরও নদী পাড়ে ছাই ফেলা হচ্ছে কেন- এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ওসি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চে বাকতা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে সরকার অটো রাইস মিলের ফেলে রাখা ছাইয়ের ঢিবিতে পড়ে আরাফাত হোসেন (১১) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী দগ্ধ হয়। ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২১ মার্চ ভোর ৬টায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তার মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।