রাজশাহী: তীব্র খরার বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের পর আষাঢ়ও বৃষ্টিহীনতায় পার করছে রাজশাহীবাসী। শনিবার (২ জুলাই) সকাল থেকেই রোদ আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন সবাই।
আজ সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া। রাজশাহী মহানগরীর মধ্য ও নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছেই না। এতে জনজীবনে আরও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, আলুপট্টি, সাগরপাড়া, রেলগেট, শালবাগান, লক্ষ্মীপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমজীবী মানুষ গরমের তীব্রতায় হাঁসফাঁস করছেন। অনেকেই গাছের ছায়া খুঁজে সেখানে একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন। বেড়েছে রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে কোমলপানীয় বিক্রি। গরম থেকে বাঁচতে নিম্নমাণের বিভিন্ন পানীয় পান করছেন পথচারীরা। আর সচেতন মানুষ বেশি টাকা দিয়ে ডাবসহ বিভিন্ন ধরনের শরবত পান করছেন। গরমে ডাবের দামও আগুন! ছোট একটি ডাবও ৫০ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি ও বড় ডাব ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার বলছে, রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এখনও ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ওঠানামা করেছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (০১ জুলাই) ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, এই আষাঢ়েও বৃষ্টির দেখা নেই। তাই তাপমাত্রা কমছে না। ভ্যাপসা গরমে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। রাজশাহীতে সর্বশেষ বৃষ্টিপাত হয়েছে গত ২৮ জুন।
ওই দিন শূন্য দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তাই ভারী ও লাগাতার বর্ষণ ছাড়া এই গরম কাটবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে সারা দেশে তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে শনিবার বৃষ্টি কমতে পারে বলেও জানিয়েছে। তবে তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ফের বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় অন্য সব বিভাগেই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায়। ঢাকায় এ সময়ে তিন মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের মধ্যে রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২২
এসএস/এএটি