বরগুনা: উপকূলীয় জেলা বরগুনায় শুধুমাত্র সামুদ্রিক নিবন্ধিত ও শতভাগ ফিটনেস সনদ আছে এমন ট্রলার রয়েছে ১ হাজার। এর মধ্যে গ্লোবাল সিস্টেম অব মোবাইল নেটওয়ার্কের (জিএসএম) আওতায় আনা হচ্ছে ৮৫০টি ট্রলার।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গভীর সমুদ্রগামী জেলেদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমবারের মতো দুর্যোগের সময় সতর্কবার্তা, ঝড়ের পূর্বাভাস এবং আগাম সতর্ক করতে এ নেটওয়ার্কিং সিস্টেম চালু হতে যাচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে জেলায় ৮৫০টি ট্রলারে এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে ট্রলারগুলোতে সার্ভে চলমান রয়েছে। খুব শিগগিরই অন্য কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরই ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, সাগরে গভীর নিম্নচাপসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। অনেক সময় দুর্যোগের সতর্কবার্তা পৌঁছায় না জেলেদের কাছে। যে কারণে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও জেলেরা নদী বা সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। তখন ঝড়ের কবলে পড়ে তাদের প্রাণ হারাতে হয়। তাই উপকূলের সমুদ্রগামী জেলেদের সুরক্ষায় এবং তাদের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছাতে জিএসএম সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এতে জেলেরা দুর্যোগের সময় নিরাপদে অবস্থান করতে পারবেন।
এক নজরে বরগুনার সাধারণ তথ্যাবলী:
আয়তন ১৯৩৯ দশমিক ৩৯ বর্গ কিলোমিটার, জনসংখ্যা ১২ লাখ ৩০ হাজার, উপজেলা ছয়টি ইউনিয়ন ৪২টি, মৎস্য চাষি ৮২ হাজার ২২৬ জন, মৎস্যজীবী ৪৭ হাজার ৪৪০ জন, নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৫ হাজার ১৫৩ জন, মৎস্য আড়ত ২০৮টি, মৎস্য হ্যাচারি সরকারি দুইটি, বেসরকারি চারটি, চিংড়ি হ্যাচারি একটি (বেসরকারি), মৎস্য নার্সারি ৬৯টি (বেসরকারি), একটি সরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (পাথরঘাটা), সরকারি পুকুর ৪১৪টি, বেসরকারি পুকুর ৮৫ হাজার ৭৩১টি, জেলায় মাছের মোট উৎপাদন ১ লাখ ৯ হাজার ৭০ মেট্রিক টন, রেণু উৎপাদন ১ হাজার ৮২৫ কেজি (সরকারি-বেসরকারি), চিংড়ির পি এল উৎপাদন ৪ লাখ (বেসরকারি), ইলিশ উৎপাদন ৭৩ হাজার ৩৮১ মেট্রিক টন।
বরগুনায় নিবন্ধিত জেলে পরিবারের সংখ্য বরগুনা সদরে ৭ হাজার ৭৭৮, আমতলীতে ৬ হাজার ৭৮৯, পাথরঘাটা ১১ হাজার ৪১১, বেতাগী ৩ হাজার ৫০, বামনায় ১ হাজার ১৫৬ ও তালতলী উপজেলায় ৭ হাজার ১২৫ জন। মোট ৩৭ হাজার ৩০৯ জন জেলে রয়েছেন।
জেলায় মাছের উৎপাদন ও চাহিদা:
মাছের মোট উৎপাদন ১ লাখ ৯ হাজার ৭০ মেট্রিক টন। মাছের মোট চাহিদা ২৬ হাজার ৯৩৭ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত মাছের পরিমাণ ৮২ হাজার ১৩৩ মেট্রিক টন।
বিগত পাঁচ বছরে মাছের উৎপাদন:
২০১৫-১৬ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৭ হাজার ৩০৩ (মেট্রিক টন) ও সামুদ্রিক ৭৪ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। মোট ৯২ হাজার ০০৩ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৬-১৭ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৭ হাজার ৩৫৩ মেট্রিক টন ও সামুদ্রিক ৭৫ হাজার ১৫০ (মেট্রিক টন)। মোট ৯২ হাজার ৫০৩ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৭-১৮ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৮ হাজার ৩৭১ মেট্রিক টন ও সামুদ্রিক ৮০ হাজার ৯৭ মেট্রিক টন। মোট ৯৮ হাজার ৪৬৮ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৯ হাজার ৬৭৪ মেট্রিক টন, সামুদ্রিক ৮৩ হাজার ৫৮২ মেট্রিক টন। মোট ১ লাখ ৩ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৯-২০ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ২১ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন, সামুদ্রিক ৯০ হাজার ১২৬ মেট্রিক টন। মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৩৬৬ মেট্রিক টন উৎপাদন।
বিগত পাঁচ বছরে ইলিশ মাছের আহরণ:
২০১৫-১৬ সাগরে ৬০ হাজার ৭০ মেট্রিক টন, নদীতে ১৭৩৫ মেট্রিক টন। মোট ৬১ হাজার ৮০৫ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৬-১৭ সাগরে ৬২ হাজার ২৭৭ মেট্রিক টন, নদীতে ২ হাজার ৯১ মেট্রিক টন। মোট ৬৪ হাজার ৩৬৮ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৭-১৮ সাগরে ৬৬ হাজার ৯১৭ মেট্রিক টন, নদীতে ৪ হাজার ৮২২ মেট্রিক টন। মোট ৭১ হাজার ৭৩৯ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৮-১৯ সাগরে ৬৭ হাজার ৩৩ মেট্রিক টন, নদীতে ৪ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন। মোট ৭১ হাজার ৮৮৩ মেট্রিক টন উৎপাদন।
২০১৯-২০ সাগরে ৬৮ হাজার ২৩০ মেট্রিক টন, নদীতে ৫ হাজার ১৫১ মেট্রিক টন। মোট ৭৩ হাজার ৩৮১ মেট্রিক টন উৎপাদন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
এসআরএস