ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

টাঙ্গাইলে ২৪ ঘণ্টায় ১০১ মি.লি. বৃষ্টি, বিপর্যস্ত জনজীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
টাঙ্গাইলে ২৪ ঘণ্টায় ১০১ মি.লি. বৃষ্টি, বিপর্যস্ত  জনজীবন

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে টানা দুই সপ্তাহ প্রখর রোদ থাকার পর ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। টানা দুই দিনের দফায় দফায় ভারী বৃষ্টির কারণে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

এতে করে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শ্রমিক ও দিন মজুররা। সব মিলিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে যমুনাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট নিম্নচাপ কেটে গেলে দুই/ তিন দিনের মধ্যে আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টাঙ্গাইলে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত টানা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ছাতা ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বের হয়নি। মুশলধারে বৃষ্টির ফলে গ্রামেরর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রোপা আমনসহ বিভিন্ন সবজি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। এছাড়াও শহরের প্রধান সড়কগুলোতে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেনের পচা দুর্গন্ধযুক্ত পানি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে একাকার হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের ধরেরবাড়ী, দুরিয়াবাড়ী, শহরের কাগমারা, আকুরটাকুরপাড়া, রেজিষ্ট্রিপাড়া, আদালতপাড়া, সাবালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভারী বৃষ্টির কারণে কেউ ঘর থেকে বের হয়নি। অন্যান্য দিনের তুলনায় শহরে যানজট ছিল খুবই কম। গ্রাম অঞ্চলেও রোগি ও অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হয়নি।

সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের ছিটকিবাড়ী গ্রামের রাজমিস্ত্রি হুমায়ন মিয়া বলেন, আমার গর্ভবতী স্ত্রী অসুস্থ হওয়ায় তাকে ডাক্তার দেখাতে টাঙ্গাইল শহরের মা ও শিশু কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি। বৃষ্টির কারণে রিকশা পেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। এছাড়াও বৃষ্টিতে রোগী নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চিন্তা করছি বৃষ্টির পানি লেগে রোগল জ্বর আসে কিনা।

একই গ্রামের রিকশাচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, যে কোন দুর্যোগে আমার মতো গরিব মানুষের খুব কষ্ট পোহাতে হয়। গত ১৫ দিন প্রচণ্ড গরমে স্বাভাবিকের মতো রিকশা চালাতে পারিনি। আজতো সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে ৫০০/৬০০ টাকা আয় করলেও আজকে দেড় দুইশ’র বেশি হবে না। এছাড়াও বৃষ্টি কারণে আমার ১৬ শতাংশ জায়গার আমন তলিয়ে গেছে। দুই একদিনের মধ্যে পানি সরে না গেলে পচে ধানের চারা নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

শহরের রেজিস্ট্রিপাড়া এলাকার বাসিন্দা করিম মিয়া বলেন, সকাল থেকে শহরের প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। সকালে বাজারে যাওয়ার সময় সড়কে তেমন পানি ছিল না। কিন্তু বাজার শেষে বাসায় ফেরার পর দেখলাম সড়কে হাঁটু পানি। শুধু পানি নয়, ড্রেনের পচা পানির সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

রডমিস্ত্রি শাহ আলম মিয়া বলেন, সকালে কাজ করার জন্য রেজিষ্ট্রিপাড়া এসেছিলাম। বৃষ্টি না কমায় তিন ঘণ্টা বসে থেকে ভিজে ভিজে বাড়ি চলে যাচ্ছি। আকাশ কালো হয়ে যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে আজকে আর বৃষ্টি থামবে না।

টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিসের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, সোমবার বিকেল ৩টা থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলে ১০১ মিলি বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সাগরে নিম্নচাপ শুরু হয়েছে। আশা করছি আগামী দুই/ তিন দিনের মধ্যে আবহাওয়া স্বাভাবিক হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।