ঢাকা: ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশে (আইইউবি) সোমবার (১০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দেশের প্রথম ফাইনান্সিয়াল ট্রেডিং ল্যাবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে ল্যাবের উদ্বোধন করেন।
আইইউবির স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড অ্যান্ট্রাপ্রেনারশিপের ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া কোলাবোরেশন ইনশিয়েটিভস-এর অংশ হিসেবে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের (এলবিএসএল) সঙ্গে অংশীদারিত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ ট্রেডিং ল্যাবটি। এলবিএসএল-এর বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা এবং আইইউবির ফিনান্স বিভাগের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় এবং শেষবর্ষের বাছাইকৃত শিক্ষার্থীরা তাদের ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অংশ হিসেবে এ ল্যাবে দেশের দুই শেয়ারবাজার ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর কার্যক্রম হাতে কলমে শিখতে পারবে। এর মধ্যে রয়েছে বিও হিসাব খোলা এবং পরিচালনা করা, শেয়ার কেনাবেচা এবং লেনদেন, বাজার বিশ্লেষণ, ইত্যাদি। পাশাপাশি, এলবিএসএল-এর ওয়েব পোর্টাল এবং নিজস্ব কয়েকটি ট্রেডিং সফটওয়্যার ব্যবহারেরও সুযোগ পাবেন আইইউবির শিক্ষার্থীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আপনি যদি বই পড়েন, তাহলে ৫০ শতাংশ শিখবেন। যদি ল্যাবে যান, ৭৫ শতাংশ শিখবেন। যখন শেয়ার বাজারে যাবেন, তখন ১০০ শতাংশ শিখবেন। সুতরাং বই থেকে পাওয়া জ্ঞান এবং ব্যবহারিক জ্ঞানের সমন্বয় থাকতে হবে। ফাইনান্সিয়াল ট্রেডিং ল্যাবে সিমুলেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে থাকা পোর্টফোলিওগুলো কীভাবে পরিচালনা করবেন তা শিখতে পারবেন এবং অর্থ উপার্জন করছেন নাকি হারাচ্ছেন সে সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক তানভীর হাসান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চআয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতির সঙ্গে শেয়ার বাজারের প্রবৃদ্ধিকে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় শেয়ার বাজারের প্রবৃদ্ধি এখনো কম। বাংলাদেশ এ মুহূর্তে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের (জনমিতিক লভ্যাংশ) সুফল ভোগ করছে। সুতরাং, তরুণ প্রজন্মকে শেয়ার বাজার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার এটাই সঠিক সময়।
উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের এখন প্রয়োজন একটি প্রযুক্তিগত রূপান্তর। এর একটি আদর্শ ক্ষেত্র হলো ব্যবসায় শিক্ষা। আমরা প্রায়শই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ডাটা সায়েন্স ইত্যাদির কথা বলি। এ বিষয়গুলো শুধুমাত্র প্রকৌশলবিদ্যার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। এদের একটা ব্যবসায়িক আঙ্গিকও আছে। আইইউবিতে আমরা একটি সেন্টার ফর ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি।
প্রকৌশল, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত এবং ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি দল এখানে কাজ করবে। আমাদের নতুন এই ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং ল্যাবের সর্বোচ্চ সুফল পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা ব্যক্তিদের জ্ঞান এবং দক্ষতাকে আমরা কাজে লাগাতে চাই।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ফাইনান্সিয়াল ট্রেডিং ল্যাব থেকে শিক্ষার্থীরা শুধু মৌলিক বিষয়গুলো জানবে তাই নয়, হাতে-কলমেও শিখবে। তারা যখন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে, তখন এটি তাদের সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে। আইইউবি যেভাবে ফাইনান্সিয়াল ট্রেডিং ল্যাব চালু করেছে, তা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, যেকোনো দেশের জন্য শেয়ার বাজার খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অর্থনীতিকে পথ দেখায় শেয়ার বাজার। সেই হিসেবে আইইউবি যে একটি ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং ল্যাব চালু করেছে, এটি একটি বড় ঘটনা।
আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন এবং স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড এন্ট্রাপেনারশিপের ডিন অধ্যাপক মেহেরুন আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৪
আরআইএস