ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

টানা পাঁচ ছক্কা মেরে রিংকু বললেন, ‘বিশ্বাস ছিল, পারব’

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
টানা পাঁচ ছক্কা মেরে রিংকু বললেন, ‘বিশ্বাস ছিল, পারব’

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ২৯ রান। উইকেটে স্বীকৃত ব্যাটার কেবল একজন।

সেই তিনি আবার ছিলেন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে। তাকে স্ট্রাইকে আনতে গেলে বল চলে যাবে আরও একটি।  এমন অবস্থায় ব্যাটিং করা দল জিততে পারে, সেটা ভাবার সংখ্যা বোধহয় তখন হাতে গোনায় কয়েকজন থাকতে পারেন। রিংকু সিং সেই কয়েকজন মানুষকেই সত্যি প্রমাণ করালেন, তবে বিস্ময়ের ঘোরে ভাসিয়েছেন অগণিত লোককে। ইয়াশ দায়ালের করা শেষ পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে গুজরাট টাইটান্সের হাতের মুঠোয় থেকে জয় ছিনিয়ে আনেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই ব্যাটার। তার ২১ বলে ৪৮ রানের ঝড়ে স্রেফ উড়ে গেল গুজরাট, হেরে যায় ৩ উইকেটে।

শেষ ওভারের আগে রিংকু অপরাজিত ছিলেন ১৬ বলে ১৮ রান করে। ইনিংসের ১৬ তম ওভারে হ্যাটট্রিক করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন গুজরাট অধিনায়ক রশিদ খান। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে উপস্থিত বেশিরভাগ দর্শকই তখন গুজরাটের জয়ের অপেক্ষায়। ১৯ তম ওভার শেষেও বেশ নিশ্চিন্তে ছিলেন। কিন্তু একের পর এক বাজে বল করে তাদের হতভম্ব করে তোলেন ইয়াশ দায়াল। বাঁহাতি এই পেসারের ওপর চড়াও হওয়ার আগ পর্যন্ত রাস্তাটা কঠিনই ছিল রিংকুর জন্য। তবে নিজের ওপর আস্থা ছিল তার। সেই আস্থায় পুঁজি রেখে টি-টোয়েন্টিতে এমন এক কীর্তি গড়লেন যা আগে কখনো ঘটেনি। শেষ ওভারে ২৯ রান তুলে জয়; এক কথায় অবিশ্বাস্য! 

ম্যাচ-সেরা হয়ে রিংকু বলেন, 'বিশ্বাস ছিল যে, আমি পারব। রানা ভাই বলেছিলেন আস্থা রেখে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করতে, তারপর যা হবে দেখা যাবে। আমি শুধু কেবল ছক্কা মারার চেষ্টা করেছিলাম। উমেশ (যাদব) ভাই বলেছিল, বেশি না ভেবে যেন শুধু বলটা খেলি। আমি এতোটা ভাবছিলাম না, শুধু যেমন বল আসছিল, তেমন খেলছিলাম। প্রতিটা বল ব্যাটের মাঝখানেই লাগল। আমি বিশ্বাস রেখেছিলাম নিজের ওপর, দিনশেষে সেটার ফল পেলাম। '

২৫ বছর বয়সী রিংকু চলনে বেশ সাদামাটা। ২০১৮ সালে তাকে দলে ভেড়ায় কলকাতা। কিন্তু লাইমলাইটে আসতে আরও অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল তাকে। গত আসরে বড় শট খেলতে পারার সামর্থ্য দেখিয়ে নজর কেড়েছিলেন তিনি।

ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন তার ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু অভাবের সংসারে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখাও বিলাসিতা। রিংকু তবুও স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্ন সত্যি করার যাবতীয় চেষ্টাও করেছেন। রিংকুর বাবা লোকের বাড়িতে সিলিন্ডার বণ্টন করতেন। অভাবের সংসারে কিছুটা সাহায্য করার জন্য এক সময় রিংকুকে কোচিং ক্যাম্প পরিষ্কার রাখার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল। লজ্জায় সেই চাকরি করতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। আইপিএলে ডাক পেয়ে দূর করেছেন পরিবারে অভাব, একইসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিজের স্বপ্নটাকেও।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৩

এএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।