ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

সময় শেষ না হওয়ার ‘প্রমাণ’ দিয়ে সুবিচার চাইলেন ম্যাথিউস

স্পোর্টস ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
সময় শেষ না হওয়ার ‘প্রমাণ’ দিয়ে সুবিচার চাইলেন ম্যাথিউস

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে 'টাইমড আউট' হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। সংবাদ সম্মেলনেই দাবি করেছিলেন, তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।

 

এই অভিজ্ঞ লঙ্কান অলরাউন্ডার জানিয়েছিলেন, তার কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে যা তার দাবির পক্ষে প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে। এবার সেই ফুটেজ প্রকাশ করে আইসিসির কাছে সুবিচার চাইলেন তিনি। শুধু কি তাই, বাংলাদেশের দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে 'প্রতারক' বলেও অভিহিত করেছেন ম্যাথিউস।

নিজের যুক্তির স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে কয়েকটি ভিডিওর স্ক্রিনশট শেয়ার করে ম্যাথিউস লিখেছেন, 'প্রমাণ! ক্যাচ ধরা থেকে শুরু করে হেলমেটের স্ট্র্যাপ খুলে যাওয়া পর্যন্ত সময়। ' আরেকটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, 'ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে হেলমেট বদলানোর পরও আমার হাতে পাঁচ সেকেন্ড সময় ছিল। চতুর্থ আম্পায়ার কি দয়া করে এটা শোধরাতে পারবেন? মানে নিরাপত্তা কারণে হেলমেট ছাড়া বোলারের মুখোমুখি হতে পারতাম না। এটা প্রতারণা; আমি সুবিচার চাই। ' আরেকটি পোস্টে ভিন্ন একটি ভিডিও পোস্ট করে ম্যাথিউস লিখেছেন, 'আমি এখানেই ক্ষান্ত দিচ্ছি! বাকিটা আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন। ' 

বিতর্কিত ঘটনাটি ঘটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ২৫তম ওভারে। সাদিরা সামারাবিক্রমা সাকিবের বলে আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কিন্তু যে হেলমেট নিয়ে তিনি নেমেছিলেন, সেটি নিয়ে সংশয় ছিল তার। পরে আরেকটি হেলমেট আনা হয়, তবে তাতেও সন্তুষ্ট হননি।  

এর মধ্যে আম্পায়ারের কাছে এমসিসির আইনের ৪০.১.১ নম্বর ধারা অনুযায়ী আবেদন করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। পরে তিনি জানিয়েছেন, তাকে এসে এক ফিল্ডার মনে করিয়ে দিয়েছেন নিয়মটি। ওই নিয়মে বলা আছে, ‘কোনো ব্যাটার আউট হয়ে যাওয়া বা অবসর নেওয়ার পর যে ব্যাটার আসবেন, তাকে অথবা অন্য ব্যাটারকে ৩ মিনিটের মধ্যে পরবর্তী বল মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অন্যথায় যে ব্যাটসম্যান নামছেন, তাকে টাইমড আউট হতে হবে। ’

সাকিবের আবেদনে নিয়ম অনুযায়ী সাড়া দেন আম্পায়ার। কারণ ততক্ষণে পেরিয়ে গেছে প্রায় পাঁচ মিনিট। এমন সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি ম্যাথিউজ। সাজঘরে ফেরার সময় হেলমেট ছুড়ে মারেন তিনি। এ ঘটনার পর ম্যাচেও কয়েকবার উত্তেজনা ছড়ায় দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে।  

ম্যাচ শেষে ম্যাথিউস সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তার দাবি, হেলমেটের ফিতা ছিঁড়ে যাওয়ার সময় আরও পাঁচ সেকেন্ড সময় বাকি ছিল। ম্যাথিউস বলেন,  'অবশ্যই আমরা সবাই জয়ের জন্য খেলি। এটা যদি নিয়মের মধ্যে হতো তাহলে ঠিক হতো। নিয়মে পরিষ্কার বলা আছে দুই মিনিটের ভেতর আমাকে সেখানে থাকতে হবে। আমাদের ভিডিও ফুটেজ আছে, সেটা পরে বিবৃতিতে প্রকাশ করব। আমি এখানে এসে যা ইচ্ছা তাই বলছি না। আমি প্রমাণের সঙ্গেই কথা বলছি। হেলমেটের ফিতা ছিঁড়ে যাওয়ার পরও আমার হাতে পাঁচ সেকেন্ড সময় ছিল। '

তবে বিষয়টি ভিন্নমত সাকিবের। ম্যাচশেষে তিনি বলেন, 'একজন ফিল্ডার আমার কাছে এসে বলল, যদি আমি আবেদন করি তাহলে (ম্যাথিউস) সে আউট হয়ে যাবে। এরপর আমি আবেদন করি এবং আম্পায়ার আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি সিরিয়াস কি না। এটা নিয়মে আছে; জানি না সেটা ভুল নাকি সঠিক। মনে হচ্ছিল যেন যুদ্ধে আছি, তাই যা করার ছিল, সেটা করেছি আমি। এ নিয়ে বিতর্ক হবে। কিন্তু এটা যদি নিয়মে থাকে, আমি সেই সুযোগ নিতে পিছপা হব না। অবশ্যই এটা (টাইমড আউট) আমাদের সাহায্য করেছে সেটা অস্বীকার করবো না। '

সাকিবের এমন সিদ্ধান্তের পক্ষেও কথা বলেছেন অনেকেই। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন, ভারতীয় ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে মনে করিয়ে দিয়েছেন, এটা আইসিসির ক্রিকেট আইনেই আছে। ফলে সাকিব যা করেছেন আইন অনুযায়ী ঠিকই আছে। বরং ক্রিকেটীয় চেতনার কথা বলে যারা সাকিবের সমালোচনা করছেন, তাদের একহাত নিয়েছেন তারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৩
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।