শুরুটা ভালো হয়নি পাপুয়া নিউগিনির। এরপর তিন ব্যাটারের ব্যাটে চড়ে আশা খুঁজে পেয়েছিল তারা, শেষ অবধি পায় লড়াই করার মতো সংগ্রহও।
রোববার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান করে পিএনজি। ওই রান তাড়া করতে নেমে এক ওভার হাতে রেখে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা পাপুয়া নিউগিনি বিপদেই পড়ে যায় শুরুতে। প্রথম তিন ওভারে একটি বাউন্ডারিও হাঁকাতে পারেনি তারা। ১০ রান তুলতেই এই সময়ে হারিয়ে ফেলে দুই উইকেট। শুরুটা হয় টনি উরাকে দিয়ে। রোমারিও শেফার্ডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৫ বলে ২ রান করেন তিনি।
তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই উইকেট পান আকিল হোসেইন। তার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২ বলে ১ রান করেন লেগা সাইয়াকা। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যাওয়া পাপুয়া নিউগিনির হয়ে এরপর হাল ধরেন সেসে বাউ ও আসাদ ভালা। চতুর্থ ওভারে বাউয়ের ব্যাট থেকে আসে প্রথম বাউন্ডারি, পরের ওভারের প্রথম বলে ভালা ছক্কা হাঁকান।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই অবশ্য ফিরে যান ভালা। আলজারি জোসেফের তিন বলে দুটি চার হাঁকিয়েছিলেন। এরপর ওই ওভারের শেষ বলেই রস্টন চেজ দুর্দান্ত ক্যাচ নেন তার। ২২ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ২১ রান করেন ভালা।
তার বিদায়ের পর পুরো গল্পজুড়েই বাউ। একাই লড়াই করতে থাকেন তিনি। কিছুক্ষণ তাকে সঙ্গ দেওয়া চার্লস আমিনি রাসেলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ১৪ বলে ১২ রান করেছিলেন তিনি। আরেকদিকে থাকা বাউ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন।
৪২ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন তিনি। বাউ অবশ্য ইনিংসটা শেষ অবধি টেনে নিতে পারেননি। হাফ সেঞ্চুরি পেয়ে মুখোমুখি হওয়া পরের বলেই জোসেফের বলে বোল্ড হয়ে যান বাউ। ছয় চার ও ১ ছক্কার ইনিংসে ৪৩ বলে ৫০ রান করেছেন তিনি।
তার বিদায়ের পর পাপুয়া নিউগিনির শেষটা দুর্দান্ত করেন কিপলিন দুরিগা। ৩ চারে ১৮ বলে ২৭ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে দুই উইকেট পান আন্দ্রে রাসেল।
রান তাড়ায় নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শুরুতে বেশ ভালোভাবেই চেপে ধরেছিল পাপুয়া নিউগিনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আলি নাউয়ের প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হন জনাথন চার্লস। ওই ওভারের মাঝেই বৃষ্টি আসে। যার আগে ও পরে মিলিয়ে উইকেট মেডেন করেন নাউ।
২০ মিনিট বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকার পর নিকোলাস পুরানকে নিয়ে পাওয়ার প্লেতেই ঘুরে দাঁড়ান ব্রেন্ডন কিং। চার্লসের পর আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ওই ছয় ওভারে ৫২ রান করে তারা। কিন্তু পাওয়ার প্লে শেষ হতেই ফের চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টানা দুই ওভার বাউন্ডারি না আসার পর কিরিকাওয়ের করা নবম ওভারের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান পুরান।
২৭ বলে ২৭ রান করে লং অনে দাঁড়ানো উরার হাতে ক্যাচ দেন পুরান। পরের ওভারে এসে চাপে পড়া ক্যারিবীয়দের ফের আঘাত করেন পাপুয়া নিউগিনির অধিনায়ক আসাদ ভালা। তিনিও করেন উইকেট মেইডেন। এই ওভারে ভালা ফেরান ব্রেন্ডন কিংকে। এই ওপেনার ২৯ বল খেলে ৭ চারে ৩৪ রান করেছিলেন।
এরপর আরও দুটি উইকেটও পায় পাপুয়া নিউগিনি। ক্যারিবীয় অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল ১৪ বলে ১৫ রান করে চাঁদ সোপার ও শেরফান রাদাফোর্ড ৭ বলে ২ রান করে আউট হন ভালার বলে। শেষ ২৪ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার হয় ৪০ রান। ম্যাচের প্রেক্ষাপটে যেটি ছিল বেশ কঠিনই।
কিন্তু আন্দ্রে রাসেল ও রস্টন চেজ মিলে সেটিকে সহজ করে ফেলেন ওই রান তাড়া। ৪ চার ও ২ ছক্কার ইনিংসে ২৭ বলে ৪২ রান করেন চেজ। ৯ বলে ১ ছক্কায় ১৫ রান আসে আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে। এক ওভার আগেই ম্যাচ জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৪
এমএইচবি