চার, ছক্কা, সেঞ্চুরি, রেকর্ড- এই ছিল ঢাকা ক্যাপিটালস ইনিংসের গল্প। লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম মিলে দুর্বার রাজশাহীর বোলারদের তুলোধোনা করেন, দুজনেই তুলে নেন সেঞ্চুরি।
সিলেটে রোববার বিপিএলের ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীকে ১৫০ রানে হারিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে ২৫৪ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ঢাকা। ওই রান তাড়ায় নেমে সব উইকেট হারিয়ে ১০৪ রানের বেশি করতে পারেনি রাজশাহী। এর আগে ২০১৩ সালে সিলেট রয়্যালসের বিপক্ষে ১১৯ রানে জিতেছিল চিটাগাং কিংস। সেটিই এতদিন রানের ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড ছিল। এবার তা ছাড়িয়ে গেছে ঢাকা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা কিছুটা দেখেশুনেই করেন ঢাকার দুই ওপেনার। প্রথম চার ওভারে তারা নেন ২২ রান। আক্রমণের শুরুটা হয় পঞ্চম ওভার থেকে। সানজামুলের ওই ওভারের প্রথম চার বলই বাউন্ডারি হাঁকান তানজিদ, ওই ওভারে আসে ২১ রান।
মেহরব হোসেনের করা পরের ওভারে ১৬ রান নেন লিটন দাস। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫৯ রান আসে। ১০ ওভারে ঢাকার রান হয় ১১৫। এর মধ্যে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়ে যায় তানজিদ ও লিটন দুজনেরই।
১৬তম ওভারে শফিউল ইসলামের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। স্রেফ ৪৪ বলে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান তিনি। তখন তার জন্য অভিবাদন ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তানজিদ। তিনিও পরে সেঞ্চুরি করেছেন।
ইনিংসে শেষ ওভারের প্রথম বলে শফিউলকে চার হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ হয় তার। পরের বলেও তিনি ছক্কা হাঁকান। ইনিংস শেষের তিন বল বাকি থাকতেই শফিউলকে তুলে মারতে গিয়ে সোহাগ গাজীর হাতে তানজিদ ক্যাচ দিলে রেকর্ড জুটির অবসান ঘটে।
ততক্ষণে ১১৮ বলে ২৪১ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন লিটন ও তানজিদ। বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের জুটির আট বছর আগের রেকর্ড ভেঙে দেন তারা। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইল ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ২০১ রানের জুটি গড়েন। সেটিই ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। এবার তা ছাড়িয়ে গেলেন লিটন ও তানজিদ। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে যেকোন উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটিও এটি।
লিটন শেষ পর্যন্ত ১০ চার ও ৯ ছক্কার ইনিংসে ৫৫ বলে ১২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ইনিংস খেলার পথে টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন লিটন। ২ বলে সাব্বিরের ৭ রানের ইনিংসে যোগ করে ঢাকা পায় ২৫৪ রানের সংগ্রহ। বিপিএলে কোনো দলের এটিই সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান করেছিল রংপুর, সেটিই এতদিন ছিল সর্বোচ্চ।
রেকর্ড রান তাড়ায় নেমে দিশেহারা ছিলেন রাজশাহীর ব্যাটাররা। ৩৪ রানে পাঁচ উইকেট হারায় তারা। তখন অবধি খেলা হয়েছে ৬ ওভার তিন বল। এরপর ইয়াসির আলি ১৩ বলে ১৭ রান করেন। কিন্তু তিনিও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি।
রাজশাহীর হয়ে সর্বোচ্চ রান আসে রায়ান বার্লের ব্যাটে। ৩২ বলে ৪৭ রান করেন তিনি। ঢাকার হয়ে দুই উইকেট করে নেন আবু জায়েদ রাহী, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, মোসাদ্দেক হোসেন ও ফারমানুল্লাহ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
এমএইচবি/এমএইচএম