ক্রিকেট বিশ্বে এক কিংবদন্তির নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে অস্ট্রেলিয়ান উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট মনে করছেন, আইপিএলে এবারই ধোনির শেষ মৌসুম হওয়া উচিত।
চলতি মৌসুমে চেন্নাইয়ের পারফরম্যান্স একেবারে হতাশাজনক। দল গঠনে ভুল, অধিনায়কের চোট, ধোনির ফর্মহীনতা—সব মিলিয়ে প্রায় প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে দলটি। যদিও কাগজে-কলমে এখনো সম্ভাবনা টিকে আছে, বাস্তবতা বলছে—চেন্নাইয়ের এবার আর কিছু করার নেই।
ধোনি কিছুদিন আগেই আভাস দিয়েছিলেন, আগামী মৌসুমেই হয়তো তারা ‘একটা ভারসাম্যপূর্ণ একাদশ নিয়ে আবার ফিরে আসবে’। কিন্তু গিলক্রিস্টের চোখে সেই দলে ধোনির জায়গা আর থাকা উচিত নয়।
“সবকিছুই অর্জন করে ফেলেছো, এবার ছেড়ে দাও”—গিলক্রিস্টের আবেদন
ক্রিকেটভিত্তিক ওয়াবসাইট 'ক্রিকবাজ'-এ এক আলোচনায় গিলক্রিস্ট বলেন, “বড় একটা নাম—এমএস ধোনি। তার প্রমাণ করার আর কিছুই বাকি নেই। সে ক্রিকেটে সবকিছুই করে ফেলেছে। ধোনি নিজেই জানে সে কী করতে চায়, কিন্তু আমি বলছি, ভবিষ্যতের কথা ভাবলে... হ্যাঁ, এটা বলাটা কষ্টের, তবুও বলতে হচ্ছে—ধোনিকে আর দেখা না গেলেই ভালো। আমি ধোনিকে ভালোবাসি, সে একজন আইকন, একজন চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু এবারই হয়তো সময় হয়েছে বলার—বিদায়। ”
ধোনি যতবার অধিনায়কত্বে ফিরেছেন, ততবারই চেন্নাইয়ের ভাগ্য যেন আরও খারাপ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এখনও পর্যন্ত ৯ ম্যাচে মাত্র ২টি জয়—এভাবে চললে দলটি এবার ‘উডেন স্পুন’ নিয়েই মৌসুম শেষ করতে পারে।
২০২৩-এ বিদায় নিলেই হতো...
অনেকের মতে, আইপিএল ২০২৩ ছিল ধোনির জন্য বিদায়ের আদর্শ মুহূর্ত। চেন্নাইকে পঞ্চমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন করে তিনি চাইলে কিংবদন্তির আসনে থেকেই অবসর নিতে পারতেন। কিন্তু ধোনি তখন বলেছিলেন, “এটা অবসরের জন্য পারফেক্ট সময়, কিন্তু আমি আরও এক মৌসুম খেলতে চাই—চেন্নাইয়ের ভক্তদের সামনে। ”
ধোনি ঠিকই ফিরেছিলেন। পুরনো দিনের মতো লম্বা চুলে, আগুনে কিছু শট নিয়ে আবার আলোচনায় আসেন। কিন্তু পারফরম্যান্সে ধার ছিল না আগের মতো। এবারের আইপিএলে এখন পর্যন্ত ধোনির সংগ্রহ মাত্র ১৪০ রান। হাঁটুর সমস্যার কারণে তাকে ৭ বা ৯ নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যাচ্ছে, যেন নিজেই বোঝেন, শরীর আর সাড়া দিচ্ছে না।
চেন্নাই কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং বারবার বলেছেন, ধোনি দীর্ঘ ইনিংস খেলতে পারেন না। তার দৌড়ের সক্ষমতাও কমে গেছে অনেকটাই। ফলে মাঠে নামলেও সেটি যেন শুধুই আবেগের জায়গা থেকে।
সম্মানজনক বিদায়ের আহ্বান
ধোনি চাইলে আরও এক মৌসুম খেলতেই পারেন, কিন্তু তাতে তার ‘আইকনিক’ ক্যারিয়ারের সম্মান কতটা অটুট থাকবে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। তাই গিলক্রিস্টের মতো অনেকেই চান, কিংবদন্তির বিদায়টা হোক মর্যাদার, অতীতের অর্জন ক্ষুণ্ণ না করে।
এমএইচএম