ক্রিকেটের কিংবদন্তিদের সম্মানে অনন্য এক সন্ধ্যা দেখা গেল লন্ডনের ঐতিহাসিক অ্যাবি রোড স্টুডিওসে। ‘আ ডে উইথ দ্য লেজেন্ডস’ শিরোনামে আয়োজনটি স্মরণীয় হয়ে থাকল ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে।
নতুন এই সদস্যরা হলেন: মাহেন্দ্র সিং ধোনি, ম্যাথু হেইডেন, হাশিম আমলা, গ্রায়েম স্মিথ, ড্যানিয়েল ভেটোরি, সারাহ টেইলর ও সানা মির। এর মাধ্যমে আইসিসি হল অব ফেমের মোট সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ১২২ জনে। আগের সদস্য, সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধি ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভোটে নির্বাচিত হয় এই তালিকা।
সবসময় এমন জমকালো আয়োজন দেখা যায় না আইসিসির পক্ষ থেকে। অনেক সময় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সেরে নেওয়া হয় সম্মাননা প্রদান। কিন্তু এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগেই জাঁকজমকপূর্ণভাবে হল অব ফেমে স্বাগত জানানো হলো ক্রিকেটের সাত তারকাকে।
তাদের নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। মাহেন্দ্র সিং ধোনি তো একাই ইতিহাস! সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তিনি যে ফিনিশারের সংজ্ঞা নতুন করে লিখেছেন, তা এখনো আদর্শ হয়ে আছে অনেক তরুণ ক্রিকেটারের কাছে। একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে তিনটি ভিন্ন আইসিসি ট্রফি জেতার রেকর্ডটি আজও অটুট।
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এছাড়া ধোনির নেতৃত্বেই ভারত প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠেছিল টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে। কিপার হিসেবে তার প্রতিভা এবং সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্যাট হাতে তার ভূমিকা তাকে বানিয়েছে অনন্য এক প্রতীক। ধোনি খেলেছেন ৯০ টেস্ট, ৩৫০ ওয়ানডে ও ৯৮ টি-টোয়েন্টি।
হাশিম আমলা ছিলেন রানের কারিগর। উইলো থেকে যেন ছন্দ বের করতেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। দেশের হয়ে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরির কৃতিত্বও তার। টেস্ট ও ওয়ানডেতে একসময় ছিলেন বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান। আমলার ক্যারিয়ার সংখ্যার বিচারে যেমন সমৃদ্ধ, তেমনি ছিল মাধুর্যে ভরপুর।
তারই সতীর্থ গ্রায়েম স্মিথ ক্রিকেট দুনিয়ায় পরিচিত ছিলেন একাধারে সাহসী অধিনায়ক ও নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে। মাত্র ২২ বছর বয়সে নেতৃত্বের ভার কাঁধে তুলে নেন, আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে যান শীর্ষে। টেস্টে সর্বাধিক ম্যাচে অধিনায়কত্ব ও সর্বোচ্চ জয় সংখ্যার রেকর্ড আজও তার দখলে।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন ছিলেন দুর্দান্ত ওপেনার। দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী দলের এই সদস্য ২০০১ সালে ভারতের মাটিতে দারুণ পারফরম্যান্সের পর নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করে নেন। তার ব্যাটিংয়ে ছিল দাপট ও ধারাবাহিকতা। প্রতিপক্ষের জন্য এক আতঙ্ক ছিলেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেটোরি শুধু দলের প্রাণভোমরাই ছিলেন না, ছিলেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ৪ হাজার টেস্ট রান ও ৩০০ উইকেটের ডাবল রয়েছে তার নামের পাশে, যা বলেই দেয় ভেটোরির সুন্দর পারফরম্যান্সের কথা। স্পিনে তার কৌশল, পাশাপাশি নিচের সারিতে ব্যাটিংয়ের কার্যকারিতা নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য ছিল অমূল্য সম্পদ।
নারী ক্রিকেটেও এবার জায়গা পেল দুই তারকা। ইংল্যান্ডের সারাহ টেইলর কিপার হিসেবে গড়েছেন ইতিহাস। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই নিজের জাত চিনিয়ে নারী দলের ব্যাটিং লাইনআপে হয়ে ওঠেন অমূল্য রত্ন। দুটি বিশ্বকাপ জয়ের অংশ তিনি। অন্যদিকে পাকিস্তানের সানা মির নারী ক্রিকেটের পথিকৃত। দেশের হয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। নেতৃত্ব দিয়েছেন পাকিস্তানের নারী দলকে, এনে দিয়েছেন এশিয়ান গেমসের দুটি সোনা।
আরইউ