মিরপুর থেকে: প্রথম রাউন্ডে কিছুটা হলেও বাংলাদেশের জন্য বাধা হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু স্বাগতিকদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাত্তাই পেল না তারা।
আফগানিস্তান: ৭২/১০ (১৭.১ ওভার)
বাংলাদেশ: ৭৮/১ (১২ ওভার)
ফল: বাংলাদেশ জয়ী নয় উইকেটে
রোববার আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির উদ্বোধনী ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে মাশরাফি মুর্তজার উইকেট নেওয়ার উল্লাস শেষ পর্যন্ত ছিল। সাকিব আল হাসান ও আব্দুর রাজ্জাকের ঘূর্ণিতে এক নিমিষেই গুটিয়ে যায় আফগানরা।
বিশ্ব আসরে সর্বনিম্ন রানে সব উইকেট হারানোর লজ্জা এদিন পায় আফগানিস্তান। ৭২ রানে গুটিয়ে যায় তারা। এর আগে গত দুটি আসরে ৮০ রানের সর্বনিম্ন গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ড ছিল তাদের। আর বাংলাদেশও প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিপক্ষকে এত কম রানে গুটিয়ে দেয়।
বল হাতে এদিন প্রথম ডেলিভারিতেই উইকেট পান মাশরাফি। ইনিংসের শুরুতেই পাওয়া উইকেটের আবহ পুরো দলের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। মাশরাফির প্রথম বলে মোহাম্মদ শাহজাদ কভারে দাঁড়িয়ে থাকা মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দি হন। প্রথম ওভারে ডানহাতি পেসার দেন মাত্র একটি রান, পানও একটি উইকেট।
সাকিব দলের চতুর্থ ওভারে বল হাতে নেন। প্রথম ওভারে কৃপণ বোলিং করে মাত্র দুটি রান দেন তিনি। নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে গুলবাদিন নাইবকে জীবন দেন সাকিব। লং অনে দাঁড়িয়ে থাকা সাব্বির রহমান বল তালুবন্দি করতে ব্যর্থ তো হনই, চারটি রান দিয়ে দেন।
অবশ্য সাব্বির তার এই ব্যর্থতার দুঃখ ভুলিয়ে দিয়েছেন পরের বলেই। গুলবাদিনকেই (২১) তালুবন্দি করেন তিনি। সাকিব তৃতীয় বলে নাজীব তারাকাইকে (৭) সাজঘরে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পান।
পরের ওভারে সাব্বিরের থ্রোতে রান আউট হন নওরোজ মঙ্গল। আব্দুর রাজ্জাক তার দ্বিতীয় ওভারে আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে (৩) এলবিডব্লু করে সাজঘরে পাঠান। এক ওভার বিরতিতে করিম সাদিক রান আউট হন ফরহাদ রেজার থ্রোতে। রাজ্জাক তার চতুর্থ ওভারে সামিউল্লাহ সেনওয়ারিকেও (১) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলান। মাহমুদউল্লাহও উইকেট পান। এই অলরাউন্ডার ১৬ রানে শফিকউল্লাহকে পেছনে থাকা মুশফিকের ক্যাচ বানান।
১৭তম ওভারে ফরহাদ রেজা বল হাতে নেন। অন্যদের সফলতার দিনে তিনিও খালি হাতে ফিরলেন না। দৌলত জাদরানকে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান এই ডানহাতি পেসার। নিজের শেষ ওভারের প্রথম বলে শাপুর জাদরানকে বোল্ড করে প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেন সাকিব। এই ডানহাতি অলরাউন্ডার তিন ওভার এক বল করে ৮ রান দিয়ে পেয়েছেন তিন উইকেট।
রাজ্জাক পান দুটি। একটি করে নেন মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহ ও ফরহাদ।
৭৩ রানে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং ক্রিজে নেমে এনামুল হকের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল। আর কোনো উইকেট না হারিয়ে জয় পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে এনামুলের সঙ্গী ছিলেন ম্যাচসেরা সাকিব। চার ওভার দুই বলের এই জুটিতে হার না মানা ৩৩ রান আসে। এনামুল ৩৩তম বলে তৃতীয় ছয় হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন। চারটি চারের মারও রয়েছে তার ৪৪ রানের এই অপরাজিত ইনিংসে। সাকিব টিকে ছিলেন ১০ রানে।
একমাত্র উইকেটটি নেন সামিউল্লাহ সেনওয়ারি। দলের অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে তামিম এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন। ২৭ বলে ২১ রানে তিনি আউট হন।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, এনামুল হক, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, ফরহাদ রেজা, মাশরাফি মুর্তজা, আল আমিন হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক।
আফগানিস্তান: মোহাম্মদ শাহজাদ, নওরোজ মঙ্গল, করিম সাদিক, শফিকউল্লাহ, মোহাম্মদ নবী, গুলবাদিন নাইব, সামিউল্লাহ সেনওয়ারি, দৌলত জাদরান, শাপুর জাদরান, আফতাব আলম ও নাজীব তারাকাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ১৬ মার্চ ২০১৪
**তামিম আউট, তবুও জয়ের পথে বাংলাদেশ
**২১ রানে আউট তামিম
**ব্যাটিং ক্রিজে নেমেছেন তামিম-এনামুল
**৭২ রানে গুটিয়ে গেল আফগানরা
**৭২ রানে গুটিয়ে গেল আফগানরা
**টাইগারদের বোলিংয়ে কাবু আফগানরা
**তৃতীয় উইকেটও সাকিবের
**সাকিব পেলেন দ্বিতীয় উইকেট
**রান রেট কমালেন সাকিব
**চতুর্থ ওভারে আক্রমণে সাকিব
**প্রথম বলে উইকেট পেলেন মাশরাফি
**জিততে এসেছি, হারতে নয়
**টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
**ফরহাদের থ্রোতে ষষ্ঠ উইকেট