মিরপুর স্টেডিয়াম থেকে: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টেনে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৭৩ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯৮ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান তোলে। জবাবে বাংলাদেশ ১৯.১ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯৮ রান করতে সমর্থ হয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৭১/৭ (২০ ওভার)
বাংলাদেশ: ৯৮/১০ (১৯.১ ওভার)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৩ রানে জয়ী
টস জিতে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিল।
ক্যারিবীয়দের হয়ে ব্যাটিং ওপেন করতে আসেন ডোয়াইন স্মিথ এবং ক্রিস গেইল। বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফির প্রথম ওভারেই ১১ রান তোলে দুই ওপেনার।
পাওয়ার প্লে-র ছয় ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৬ রান তোলে। ৪৭ বলে দলীয় অর্ধশতক আসে ক্যারিবীয়দের। দশ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৪ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ৯৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১২-তম ওভারের পঞ্চম বলে মাহামুদ্দুল্লাহের বলে আল-আমিনের তালুবন্দি হন ডোয়াইন স্মিথ। তবে সাজঘরে যাওয়ার আগে দশ চার আর তিন ছয়ে ৪৩ বলে ৭২ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেন।
১৩তম ওভারে সাকিবকে আক্রমনে নিয়ে আসেন মুশফিক। এসেই প্রথম বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন লেন্ডন সিমন্সকে। শূন্য রানে ফিরে যান সিমন্স। দলীয় ৯৮ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। ৭৪ বলে শতক আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৫ ওভারে দুই উইকেটে ১১৬ রান তোলে ক্যারিবীয়রা।
১৯তম ওভারের প্রথম বলে তামিমের অসাধারণ ক্যাচে ফিরে যান ক্রিস গেইল। জিয়াউরের বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৪৮ বল খেলে তিন চার আর দুই ছয়ে ৪৮ রান করেন গেইল। সেই ওভারেই দুটি ক্যাচ মিস হয় বাংলাদেশের।
তবে শেষ ওভারে প্রথম বলেই মারলন স্যামুয়েলসকে বিদায় করেন আল-আমিন হোসেন। দ্বিতীয় বলে আবারো তার আঘাত। এবারে অ্যান্ড্রু রাসেলকে ফিরিয়ে দেন তিনি। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তুলেও মিস হয়। কিন্তু চার নম্বর বলে তামিমের আর একটি চোখ ধাঁধানো ক্যাচে ব্রাভোকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন আল-আমিন। আর শেষ বলে ক্যাচ মিস হলেও দিনেশ রামদিনকে রান আউট করেন জিয়া।
শেষ ওভারে মাত্র চার রান করে একটি রান আউটসহ চার ব্যাটসম্যান ফেরেন আল-আমিন হোসেনের চমৎকার বোলিংয়ে।
মাশরাফি বিন মর্তুজা ৪ ওভার বল করে ২৫ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকলেও আল-আমিন হোসেন শেষ ওভারের চমকে ৪ ওভারে ২১ রানে তিন উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৭২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১৯.১ ওভারেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। হেরে যায় ৭৩ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে আসেন তামিম ইকবাল এবং এনামুল হক বিজয়। প্রথম ওভারেই নয় রান তুলে নেয় এনামুল-তামিম।
তবে তৃতীয় ওভারে ডাউন দ্যা উইকেটে খেলতে গিয়ে স্যামুয়েল বদরির বলে ব্রাভোর তালুবন্দি হন। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে এনামুল ক্রিসমার স্যান্তোকির বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে তামিমের পথ ধরেন। পরের বলেই সাকিবকে শূন্য রানে বোল্ড করেন স্যান্তোকি। ১৬ রানেই তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর মুমিনুল ও মুশফিক কিছুটা দলের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন। পাওয়ার প্লে-র ছয় ওভারে বাংলাদেশর তিন উইকেটে ২৯ রান ছিল। ৫২ বলে দলীয় অর্ধশতক হয় বাংলাদেশের।
দশম ওভারের প্রথম বলে সুনীল নারাইনের শিকার হন মুমিনুল (১৬)। এর পরের ওভারে স্যামুয়েল বদরি আঘাত হানেন টাইগার শিবিরে। সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম এবং মাহামুদ্দুল্লাহকে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন তিনি। মুশফিক ২২ বলে দুই চার আর এক ছয়ে ২২ রান করেন।
স্যামুয়েল বদরি ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে তুলে নেন চার উইকেট। ক্রিস স্যান্তোকি ৪ ওভার বল করে ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান। অ্যান্ড্রু রাসেল ১০ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন। সুনীল নারাইন ৪ ওভারে ১৭ রানে এক উইকেট নেন।
এর আগে সুপার টেনে নিজেদের প্রথম খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিল ৭ উইকেটে। আর স্বাগতিক বাংলাদেশ সুপার টেনের গ্রুপ ২-এর খেলায় আজই প্রথম মাঠে নেমেছিল। পাঁচবারের দেখায় বাংলাদেশ দুবার এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিনবার জয় পেল।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৪ ঘণ্টা, ২৫ মার্চ ২০১৪