ঢাকা: টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট পাকিস্তান ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী ভারত। অন্যদিকে নিজেদের সর্বশেষ দু’টি ম্যাচেই হেরেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
এমন পরিসংখ্যান সামনে রেখে শুক্রবার ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের তলানিতে ঠেকা বাংলাদেশ।
কোয়ালিফাইং রাউন্ডে হংকংয়ের মতো দুর্বল দলের কাছে হার। এরপর টুর্নামেন্টের সুপার দশ এর প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে শোচনীয় হারে আত্মবিশ্বাস বলে আর কিছু নেই টারগারদের।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এ ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ভালো নয়। টি-টোয়েন্টি রেকর্ডের চেয়ে ঢের ভালো ওয়ানডে রেকর্ড। কিন্তু যা কিছু ভালো সেখান থেকেই আত্মবিশ্বাসের সুধা পান করতে হবে টাইগারদের। সে ধরনের ভালো কিছুও রয়েছে স্বাগতিকদের কাছে।
দলের স্ট্রাইক বোলার মাশরাফি বিন মুর্তজার ভারতের বিপক্ষে দু’টি সুখস্মৃতি রয়েছে। বলতে গেলে মাশরাফির একক পারফরম্যান্সেই ভারতের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডের দু’টিই জিতেছিল বাংলাদেশ। ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কারও ছিল মাশরাফির ঝুলিতে।
শুক্রবারের ম্যাচে মাশরাফি ওই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি চাইছেন। শুধু মাশরাফি কেন-দেশের ১৬ কোটি জনতাও চাইছেন সেই পুনরাবৃত্তি। ওই জয় থেকেই বাংলাদেশ পেতে পারে শুক্রবারের ম্যাচ জেতার টনিক।
এশিয়া কাপ থেকে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচ পর্যন্ত শুধুই হার। মাঝে নন টেস্টপ্লেয়িং দেশের বিরুদ্ধে মাত্র দু’টি জয়। যদি কাউকে জিজ্ঞাসা করা হয় এটাই কি বাংলাদেশ দল। না আসলেই এটি প্রকৃত বাংলাদেশ নয়।
২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে ভারতের ওপর দানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন দেশের হার্ডহিটিং ওপনোর ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। দেশকে অনেক ম্যাচই জিতিয়েছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সোহাগ গাজী, আবদুর রাজ্জাকেরও জেতানোর রেকর্ড রয়েছে। এবার তো বাড়তি পাওনা হিসেবে থাকছে দেশের দর্শক সাপোর্ট।
প্রতিপক্ষ ভারত এখন তাকিয়ে রয়েছে শেষ চারের দিকে। বাংলাদেশের ম্যাচটি জিতে গেলে সেমিফাইনালের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। ফর্মে থাকা সুরেশ রায়না হয়তো আর ৩৮ রান করে টি-টোয়েন্টিতে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে চাইবেন। বিরাট কোহলি তার স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করে যাবেন, ফর্ম ফিরে পেতে চাইবেন যুবরাজ সিং।
আমাদেরও আছে ওদের মতোই স্বপ্ন। টি-টোয়েন্টিতে এই মিরপুরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী সাকিব আল হাসান। আট উইকেট নিয়ে তার বোলিং গড় ৯.৮। সাকিব তো চাইবেন আজ এই গড়টা আরও এগিয়ে নিতে।
মিরপুরের মাঠে স্পিনিং সুবিধা এখনো কাজে লাগাতে পারেনি দেশের স্পিনাররা, যেটি করে দেখিয়েছে ভারত। পিচের সুবিধা কাজে লাগিয়ে সাকিব, সোহাগ কিংবা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জ্বলে উঠলে বেকায়দায় পড়বে ভারতীয়রা।
বলে ব্যাটে সংযোগটা ভালো হলে দলনায়ক মুশফিক, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানই দলকে জিতিয়ে দিতে যথেষ্ট।
দলের এসব খেলোয়াড়ের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন নেই কারোরই। ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীও স্বাগতিকদের প্রতিভা দেখছেন। মাঠে এর সঠিক প্রয়োগ দেখতে চান তিনিও।
এর আগে যে বাংলাদেশ খেলেছে আসলেই এটি টাইগারদের সামর্থ্য নয়। ওই সামর্থ্যর ১২ আনা দেখাতে পারলেও স্বাগতিকরা জয় পাবেই। একথা জোর দিয়েই বলা যায়।
হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা দিয়েই ঘুরে দাঁড়াবে টাইগাররা এটাই প্রত্যাশা দেশবাসীর।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৪