মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে: অভিজ্ঞ মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার বিদায় বেলায় এমনই আবেগঘন মুহূর্ত উপহার দিতে চেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু কারও অবদানের দিকে চেয়ে না থেকে নিজেই ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন সাঙ্গাকারা।
ভারত: ১৩০/৪ (২০ ওভার)
শ্রীলঙ্কা: ১৩৪/৪ (১৭.৫ ওভার)
ফল: শ্রীলঙ্কা জয়ী ছয় উইকেটে
আইসিসির ওয়ানডে বিশ্বমঞ্চে এর আগে দুবার ফাইনালে (২০০৭ ও ২০১১) গিয়েও দ্বিতীয় শিরোপাবঞ্চিত হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আর টি-টোয়েন্টির বিশ্বআসরেও ২০০৯ ও ২০১২ সালে ফাইনালের ভূত তাড়াতে দুবার ব্যর্থ হয়েছে তারা। অবশেষে সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনের বিদায়ী ম্যাচে আনন্দে উল্লাসে মাতলেন।
এর আগে লঙ্কানদের ১৩১ রানের লক্ষ্য দিয়ে মোহিত শর্মা তার প্রথম বলেই কুশল পেরেরাকে (৫) সাজঘরে ফেরান। তবে জয়াবর্ধনেকে নিয়ে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দিচ্ছিলেন দিলশান। ১৬ বলে চারটি চারে ১৮ রানে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার হন তিনি। ৩৬ রানের জুটিটি ভাঙার পর আরেক বিদায়ী তারকা সাঙ্গাকারা মাঠে নামেন। তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি জয়াবর্ধনে। শেষ ম্যাচে ৪টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৪ বলে ২৪ রানে সুরেশ রায়নার শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
লাহিরু থিরিমান্নে ৭ রানে অমিত মিশ্রর কাছে উইকেট হারান। সাঙ্গাকারাকে যোগ্য সঙ্গ দেন থিসারা পেরেরা। অবিচ্ছিন্ন ৫৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জেতান তারা। ১৪ বলে ম্যাচজয়ী বাউন্ডারিসহ দুটি ছয়ে ২১ রানে টিকে ছিলেন থিসারা। অপর প্রান্তে ৩৫ বলে ছয়টি চার ও একটি ছয়ে হার না মানা ৫২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরাও হলেন সাঙ্গাকারা।
এর আগে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় লাসিথ মালিঙ্গার শ্রীলঙ্কা। দলের দ্বিতীয় ওভারেই উদ্বোধনী জুটিকে বিসর্জন দেয় ভারত। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস তার প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে অজিঙ্কা রাহানেকে সরাসরি বোল্ড করেন। এরপর রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির ৬০ রানের জুটিতে এগুতে থাকে তারা। তবে ১১তম ওভারে রোহিত শর্মাকে সাজঘরে পাঠান রঙ্গনা হেরাথ। ২৬ বলে তিন চারে ২৯ রান করেন তিনি। কিন্তু কোহলির ব্যাট ঠিকই হেসেছে। ছয় ম্যাচে চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি তিনি হাঁকান।
৪৩ বলে দুই চার ও তিন ছয়ে ৫০ এর ঘরে পৌঁছান কোহলি। তার সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ে ১১ বল বাকি থাকতে আউট হন যুবরাজ সিং। তবে ইনিংসের এক ওভার বাকি থাকতে যুবরাজ সিং সাজঘরে ফিরেন। ২১ বলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই ১১ রানে নুয়ান কুলাসেকারার কাছে আউট হন তিনি।
এর আগে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান কোহলিকে জীবন দেন অধিনায়ক লাসিথ মালিঙ্গা। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রঙ্গনা হেরাথকে মেরেছিলেন কোহলি, মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা মালিঙ্গা বলটি তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন। ১৭ রানে জীবন পাওয়া এই ব্যাটসম্যানই ভারতকে এনে দিলেন ৪ উইকেটে ১৩০ রানের সংগ্রহ। অবশ্য শেষ বলে মহেন্দ্র সিং ধোনির শটে দৌড়ে দুটি রান নিতে গিয়ে আউট হয়েছেন নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকা কোহলি। ৫৭ বলে পাঁচ চার ও চার ছয়ে ৭৬ রানে আউট হন তিনি।
দলকে শিরোপা এনে দিতে না পারলেও টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন কোহলি।
ভারত: রোহিত শর্মা, অজিঙ্কা রাহানে, বিরাট কোহলি, যুবরাজ সিং, সুরেশ রায়না, মহেন্দ্র সিং ধোনি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবিন্দ্র জাদেজা, অমিত মিশ্র, ভুবনেশ্বর কুমার ও মোহিত শর্মা।
শ্রীলঙ্কা: নুয়ান কুলাসেকারা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, থিসারা পেরেরা, তিলকরত্নে দিলশান, মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, লাহিরু থিরিমান্নে, কুশল পেরেরা, সাচিত্রা সেনানায়েক, রঙ্গনা হেরাথ ও লাসিথ মালিঙ্গা।
**বিদায় নিলেন জয়াবর্ধনে
**কোহলির ব্যাটে লঙ্কানদের টার্গেট ১৩১
**এক ওভার বাকি থাকতে যুবরাজ আউট
**কোহলির আরেকটি ফিফটি
বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘন্টা, ৬ এপ্রিল ২০১৪