ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

নেলসনে টাইগারদের তিন ‘ল্যান্ড’ হার্ডল ॥ অঘোর মন্ডল, অকল্যান্ড থেকে

... | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৫
নেলসনে টাইগারদের তিন ‘ল্যান্ড’ হার্ডল ॥ অঘোর মন্ডল, অকল্যান্ড থেকে

ল্যান্ড! ল্যান্ড! এবং ল্যান্ড! একে একে তিন ‘ল্যান্ড’র মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশকে। ৫ মার্চ স্কটল্যান্ডের পরা ৯ মার্চ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ।

তারপর ১৩ মার্চ মুখোমুখি হবে  অন্যতম স্বাগিতক নিউজিল্যান্ডের। এতোগুলো ‘ল্যান্ড’ অতিক্রম করে বাংলাদেশকে পৌঁছাতে হবে কোয়ার্টার ফাইনালে। স্বপ্নের সেই দৌঁড়ে বাংলাদেশের সামনে প্রথম হার্ডল স্কটল্যান্ড। নেলসনে বাংলাদেশকে থামাতে স্কটিশরা আবার ডেকে এনেছেন শেন জার্গেনসেনকে। এক সময় যিনি বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন। দলটা যার অনেক চেনা। এমন একজনকে  ফিজি থেকে উড়িয়ে আনা শুধু মাত্র বাংলাদেশকে থামাতে!

কিন্তু মাত্র একটা ম্যাচের জন্য একজন কোচকে ভাড়া করে আনার পেছনের কাহিনী কি হতে পারে! বাংলাদেশকে চমকে দেয়া? নাকি ম্যাচের আগে মনস্তাতিক লড়াইয়ে বাংলাদেশকে চাপে রাখা? জার্গেনসনকে দিয়ে স্কটিশরা হয়তো বাংলাদেশ দলের কাছে একটা বার্তাই দিতে চাইছে;‘ আমরা তোমাদের খুব ভাল করে জানি। তোমাদের দলকে আমাদের কোচ হাতের তালুর মতো চেনেন। ’ কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এই জমানায় কোন দলকে চিনতে জানতে কি আর সেই দলের  সাবেক কোচ লাগে? সেটাই যদি হতো তাহলে প্রত্যেকটা দল অন্য দলের সাবেক কোচদের ভাড়া করতেন ম্যাচ কিংবা সিরিজের আগে। অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়িয়ে আনতে পারত কোচ মিকি আর্থারকে। এক সময় যিনি অস্ট্রেলিয়া দলের কোচ ছিলেন। কিন্তু তারা ভাড়া করেছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান মাইক হাসিকে। পরামর্শক হিসেবে দলের সঙ্গে রেখেছেন বিশ্বকাপ জয়ী ভারতের সাবেক কোচ গ্যারি কারস্টেনকে। কিন্তু তাতে কি কিছু  হলো? কারস্টেনের উপস্থিতিতেও দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতের কাছে হেরেছে। সুতরাং বাইশ গজের লড়াইটা বাইশগজেই হবে। সেখানে কোন  একজন শেন জার্গেনসেন বাংলাদেশের জন্য বাড়তি মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে না। মাথা ব্যাথা যদি কিছু থাকে সেটা স্কটিশদের নিয়েই। কারণ, খেলাটার নাম ক্রিকেট। নিজেদের দিনে যে কোন দল যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। এই কথাটাই শুধু এই ম্যাচের এক্স ফ্যাক্টর হতে পারে। অন্য কিছু নয়।

আর একটা ফ্যাক্টর অবশ্য কাজ করলেও করতে পারে। বাংলাদেশের স্বেচ্ছা চাপের কাছে আত্মসমর্পন! হ্যাঁ, ছোট দলগুলোর সঙ্গে খেলার সময় কেন জানি একটু বাড়তি চাপ তৈরি হয়ে যায় বাংলাদেশের উপর। ‘জিততেই হবে’! এই চাপটা নিজেরাই নিজেদের  উপর তৈরি করে ফেলে। এটাকে আবার অনেকে বলছেন, মিডিয়ার সৃষ্ট চাপ। বাংলাদেশ দলকে যেভাবে মিডিয়া সারাক্ষণ পরখ করে যাচ্ছে, প্রতিটি মুর্হুত যেভাবে তারা ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নীচে ফেলছে ,সেরকমটা খবু কম হয়  ভারত বাদে অন্য দেশের ক্ষেত্রে। কিন্তু সত্যিই কি মিডিয়া চাপ তৈরি করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উপর! নাকি তাঁরা সহায়ক ভুমিকায় দলের পাশে থাকছেন! বিষয়টা অবশ্য চলমান এক বির্তক। তবে বল মাঠে গড়ানোর আগে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ফেবারিট বাংলাদেশ, তা নিয়ে কোন তর্ক চলতে পারে না।

অভিজ্ঞতা-দক্ষতা সব দিক দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। নেলসনের যে উইকেট সেখানেও যে স্কটিশরা বাড়তি কোন সুবিধা পাবে তা ভাবা যাচ্ছে না। আবাহওয়ার যা পূর্বাভাস তাতে বৃষ্টি নামক কিছু আকাশ থেকে নেমে আসারও সম্ভাবনা নেই। তবে সাফল্যও আকাশ থেকে নেমে আসবে না সেটা ভাল করেই জানা দু’দলের ক্রিকেটারদের। সাফল্যের জন্য জমিন তৈরি করতে হয়। সেটা বাংলাদেশ একটু আগে থেকেই তৈরি করছে। স্কটিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরিসংখ্যানও ভাল। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের মাটিতে স্কটিশদের হারিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল বিশ্বকাপে তাদের প্রথম জয়। সে তো ষোল বছর আগের কথা। এরপর আটলান্টিক থেকে বঙ্গোপসাগর, প্যাসিফিক থেকে তাসমান সাগর সব জায়গা দিয়ে অনেক পানি গড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশকে ওয়ানডেতে হারাতে পারেনি স্কটিশরা। তাসমান সাগার পাড়ে নেলসনে একটা জয় চায় তারা। কিন্তু একই চাওয়া যে বাংলাদেশেরও। ‘ এই ম্যাচটা আমরা জিততে চাই। এখানে জিতে আত্মবিশ্বাস নিয়েই অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হতে চাই। ’-বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা। সবশেষ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে  বাংলাদেশের যে সিরিজ ছিল ২০০৬ সালে, সেই দলের মাশরাফি ছাড়া আছেন আর মাত্র দু’জন। সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। দু’জনেই বাংলাদেশ দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাদের পারফরম্যান্সের উপর দলের জয়-পরাজয়ের অনেক কিছু নির্ভর করছে। কিন্তু তারও আগে দল চাইছে তামিম আর বিজয়ের কাছে ভাল একটা উদ্বোধনী জুটি। কিন্তু ফর্ম হারানো তামিমের জন্য এই ম্যাচটাই হতে পারে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সেরা সুযোগ। না হলে সৌম্য সরকার নামের আরেক বাঁহাতির প্রোমশন হতে পারে ব্যাটিং অর্ডারে। ওয়ানডাউন নয়, ওপেনার হিসেবে জায়গা পেয়ে যেতে পারেন তিনি।

তবে অ্যাসোসিয়েট সদস্য থেকে পূর্ণ সদস্যর  হিসেবে যারা প্রোমশন চায় সেই স্কটল্যান্ড কিন্তু জানপ্রাণ দিয়ে ঝাঁপাবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। তাদের হারানোর কিছু নেই। কিন্তু জয় করার জন্য পড়ে রইলো গোটা বিশ্ব!

বাংলাদেশ সময় ১৫৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫

** ইংল্যান্ড পারলে বাংলাদেশ কেন নয়? । । অঘোর মন্ডল, অকল্যান্ড থেকে
** শচীন আছেন শচীন নেই! | অঘোর মন্ডল, অকল্যান্ড থেকে
** ব্রিলিয়ান্ট! সুপার! গ্রেট! অঘোর মন্ডল, মেলবোর্ন থেকে
** বাংলাদেশের ব্র্যান্ড সাকিব!|| অঘোর মন্ডল, মেলবোর্ন থেকে
** মিরপুর টেক্কা দিচ্ছে মেলবোর্নকে ॥ অঘোর মন্ডল, মেলবোর্ন থেকে
** অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট সংস্কৃতি নিয়ে বাকযুদ্ধ ॥ অঘোর মন্ডল, মেলবোর্ন থেকে
** নীল-হলুদ নাকি লাল-সবুজের ঢেউ ॥ অঘোর মন্ডল, মেলবোর্ন থেকে
** চোক’ কি ক্রিকেটীয় জোক?। । অঘোর মন্ডল, ব্রিসবেন থেকে
** ব্রিসবেনে আক্ষেপের উল্টোপিঠে স্বস্তিও॥ অঘোর মন্ডল, ব্রিসবেন থেকে
** সাকিব-ই সেরা মানতে অসুবিধা কোথায়!॥ অঘোর মন্ডল, ব্রিসবেন থেকে
** ব্রিসবেনে আক্ষেপের উল্টোপিঠে স্বস্তিও॥ অঘোর মন্ডল, ব্রিসবেন থেকে
** বৃষ্টিবিলম্বিত ক্লার্কের ফেরা! না থেকেও আছেন আশরাফুল॥ ব্রিসবেন থেকে অঘোর মন্ডল
** শঙ্কার চোরা স্রোত ব্রিসবেনে॥ অঘোর মন্ডল, ব্রিসবেন থেকে
** ম্যাচের নায়করা ছিলেন বাইশ গজের বাইরে। । অঘোর মন্ডল, ক্যানবেরা থেকে
** ‘সি’ ফর ক্রিকেট নাকি সাইক্লোন!॥ অঘোর মন্ডল, ব্রিসবেন থেকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।