ঢাকা: বিশ্বকাপের সেমিফইনালে বাংলাদেশ! ভাবুন তো, এমন যদি হয়। কথাটা আপাত অবান্তরই।
ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ মানেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বাড়তি কিছু দেয়ার প্রতিজ্ঞা। ভারতের বিপক্ষে সাদামাটা বাংলাদেশ দলই অতীতে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছিল। তখন পারলে এখন কেন নয়!
বৃহস্পতিবার(১৯ মার্চ)মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে লড়বে মাশরাফিরা।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় ২০০৪ সালে। দলটির বিপক্ষে বাংলাদেশের ১৩তম ম্যাচে জয় ধরা দেয় টাইগার শিবিরে। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতকে ১৫ রানে হারায় হাবিবুল বাশারের বাংলাদেশ দল।
ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় জয় তুলে নিতে খুব বেশি ম্যাচ অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশের। ১৯৮৩ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ১৫তম ম্যাচে আরেকবার শচিন-সৌরভ-যুবরাজদের ভারতকে লজ্জা দেয় টাইগাররা। ২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনে মাশরাফি, রফিক ও রাজ্জাকের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর তামিম, মুশফিক ও সাকিবের ফিফটিতে পাঁচ উইকেটের দারুণ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় রাহুল দ্রাবিঢ়ের টিম ইন্ডিয়া।
তৃতীয় জয়টি আসে ২০১২ সালের এশিয়া কাপে। ১৬ মার্চ মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঁচ উইকেট হাতে রেখে ২৮৯ রান টপকে জয় পায় মুশফিকবাহিনী। প্রথমবারের মতো এশিয়াকাপের ফাইনালে পৌঁছায় বাংলাদেশ।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলে ১৯৮৮ সালের উইলস এশিয়া কাপে। চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর বাংলাদেশ দল হারে ৯ উইকেটের ব্যবধানে। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ এই ১০ বছরে ভারতের বিপক্ষে আরো তিনটি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। সবগুলোতেই ৯ উইকেটের ব্যবধানে হার মানে বাংলাদেশ।
এর পর ১৯৯৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় বসে ইন্ডিপেনডেন্স কাপ। এতে অংশ নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় আজহারউদ্দিনের ভারত। ৪ উইকেটের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারলেও ভারতকে ঘাম ঝড়িয়ে জিততে হয়েছিল সে ম্যাচ।
কারণ, সফরকারীরা বল হাতে রাখতে পেরেছিল মাত্র ২০টি। সেটিই ছিল বড় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ‘ক্লোজ’ ম্যাচ। লোয়ার অর্ডারে কানিতকার ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে না গেলে সেদিনই অন্যরকম কিছু ঘটতে পারতো। ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ একটি দৈনিকের খেলার পাতার শিরোনাম ছিল এমন- ‘আজ ২০০ রানের লক্ষ্যে নামবে বাংলাদেশ’। সে ম্যাচে বাংলাদেশ করেছিল ১৯১ রান। ২০০’র কাছাকাছি স্কোর। পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগোনো বাংলাদেশের জন্য তা ছিল অনন্য কীর্তির।
বাংলাদেশ-ভারত এ অবধি ২৮বার মুখোমুখি হয়েছে যার মধ্যে ভারতের জয় ২৪টিতে, বাংলাদেশের তিন ম্যাচে। পরিত্যক্ত হয়েছে একটি ম্যাচ। তিন জয়ের মধ্যে বাংলাদেশের দুটি জয়ই এসেছে মার্চ মাসে। আর বিশ্বকাপের শেষ আটের ম্যাচে আবারো স্বাধীনতার মাস হওয়ায় সবটুকু শক্তি দিয়ে টাইগাররা ভারতের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে আনবে-এমনই বিশ্বাস পুরো দেশবাসীর।
পৃথিবীর সকল বাঙ্গালীর স্বপ্ন এসে মিলেছে এক জায়াগায়। টাইগারদের একটি মাত্র জয়ই পারে স্বপ্ন পূরণের উচ্ছ্বাসে ক্রিকেটপ্রেমীদের মাতাল করতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘন্টা, মার্চ ১৫, ২০১৫