মিরপুর থেকে: ইনিংসের শুরুতে পাকিস্তানের টপঅর্ডার ভেঙে চুরমার করে দিলেও শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভার শেষে সফরকারীরা ৬ উইকেটে ২৩৯ রান সংগ্রহ করেছে। সিরিজ জিততে হলে মাশরাফি বাহিনীকে ২৪০ রান করতে হবে।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি জিতে ইতোমধ্যেই ১-০ তে এগিয়ে রয়েছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলি আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ইনিংসের সূচনা করতে আসেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। আর পাকিস্তানের হয়ে ব্যাটিং শুরু করতে ক্রিজে আসেন আজহার আলি এবং সরফরাজ আহমেদ। ইনিংসের প্রথম বলটি ‘নো-বল’ দিয়ে শুরু করেন মাশরাফি। প্রথম ওভার থেকে পাকিস্তানি ওপেনাররা তোলেন ৬ রান। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদ কোনো রান তুলতেই দেয়নি পাকিস্তানি ওপেনারদের।
মাশরাফি বিন মর্তুজার আস্থার প্রতিদান দিয়ে নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নেন রুবেল হোসেন। তার প্রথম বলেই স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের অসাধারণ এক ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন সরফরাজ আহমেদ। আউট হওয়ার আগে তিনি মাত্র ৭ রান করেন।
আর নিজের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে বোল্ড করে মোহাম্মদ হাফিজকে সাজঘরে ফেরান আরাফাত সানি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যর্থ হাফিজ কোনো রান করতে পারেন নি। হাফিজের বিদায়ে দলীয় নবম ওভারে আর দলীয় ৩৭ রানের মাথায় পাকিস্তানের টপঅর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন।
দলীয় ৩৭ রানে পাকিস্তানের দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠান রুবেল আর সানি। এরপর বেশ সতর্ক থেকেই টাইগার বোলারদের সামলে খেলছিল সফরকারীরা। ব্যাটিং ক্রিজের এক প্রান্ত আগলে রাখেন পাক দলপতি আজহার আলি। তবে, ৩৮ রান করা আজহারকে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান।
রুবেল, সানি আর সাকিবের পর উইকেটে ভাগ বসান নাসির হোসেন। ফাওয়াদ আলমের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দেন নাসির। কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন ফাওয়াদ।
সিরিজ বাঁচাতে এ ম্যাচ জিততেই হবে সফরকারীদের। সেই বাঁচা-মরার চাপই বিপর্যয়ে ফেলে দেয় পাক শিবিরকে। দলীয় ৫৯ রানে পাকিস্তানের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে।
দলীয় ৫৯ রানে টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পর বেশ সতর্ক হয়ে ব্যাট চালায় পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। তবে, ইনিংসের ২২তম ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে এলবি’র ফাঁদে পড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান। আউট হওয়ার আগে তিনি ১৩ রান করেন।
সফরকারীরা ৭৭ রানের মাথায় টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকলেও নবাগত সাদ নাসিমকে নিয়ে ৭৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে টাইগারদের সিরিজ জয়ের কাঁটা হয়ে উঠছিলেন হারিস সোহেল। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেই কাঁটা উপড়ে ফেলেন টাইগার দলপতি। হারিসকে দলীয় ৩৯তম ওভারের শেষ বলে কট অ্যান্ড বোল্ড করে ফেরান তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৪৪ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলে যান বাঁহাতি এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
পাকিস্তানের তরুণ উঠতি তারকা সাদ নাসিম ইনিংস ও ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৭৭ রান (৯৬ বলে) করে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ৬টি চারের পাশাপাশি ছিল একটি ছয়। এছাড়া ওয়াহাব রিয়াজ অপরাজিত ৫১ রানের একটি ইনিংস খেলেন। ৪০ বলে রিয়াজ ৫টি চারের পাশাপাশি দুটি ছক্কা হাঁকান। এ দু’জন মিলে ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন।
পাওয়ার প্লে’র দশ ওভার খেলে পাকিস্তান দুই উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৭ রান। ২০ ওভার শেষে পাকিস্তান ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ৭২ রান। ৩০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান। ৪০ ওভার শেষে পাকিস্তান ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৬৫ রান।
টাইগারদের হয়ে সাকিব দুটি আর মাশরাফি, সানি, রুবেল, নাসির একটি করে উইকেট তুলে নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, ১৯ এপ্রিল ২০১৫
এমআর
** পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিতে টাইগারদের চেষ্টা
** কাঁটা সরালেন নড়াইল এক্সপ্রেস
** উইকেটের অপেক্ষায় টাইগার বোলাররা
** বিপদ এড়াতে গলদঘর্ম পাকিস্তান
** পাকিস্তানের টপঅর্ডার চুরমার
** টাইগার বোলিং তোপে বিপর্যয়ে পাকিস্তান
** আজাহারকে ফেরালেন সাকিব
** হাফিজের স্ট্যাম্প ভেঙে দিলেন সানি
** রুবেলের প্রথম বলেই সাজঘরে সরফরাজ
** ভালো শুরু টাইগারদের
** ফিল্ডিংয়ে নেমেছে টাইগাররা